আল আমিনের ফাইফার, মিজানুর-রবিনের সেঞ্চুরিতে ব্রাদার্সের হাসি
Published: 7th, March 2025 GMT
মিজানুর রহমান ও মাহফিজুল ইসলাম রবিনের জোড়া সেঞ্চুরিতে ভর করে দারুণ জয় পেয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। আল আমিন হোসেনের ফাইফারের দিনে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়লেও কোনো লাভ হয়নি শেষ পর্যন্ত।
বিকেএসপিতে শুক্রবার (৭ মার্চ, ২০২৫) টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৮৮ রান করে শাইনপুকুর। তাড়া করতে নেমে ৪৮.
সর্বোচ্চ ১৩৬ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হন মিজানুর। ১২৯ বলে ১০টি চার ও ৫টি ছয়ের মারে ইনিংসটি সাজান তিনি। ৯৬ বলে দেখা পান শতকের। ১১৪ রান করেন ওপেনার রবিন। ১২৭ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছয়ের মারে ইনিংসটি সাজান তিনি। সেঞ্চুরি করেন ১১৭ বলে।
আরো পড়ুন:
পারভেজের সেঞ্চুরির ম্যাচে লিটন ফ্লপ, আবাহনীর জয়
৩২ বলে ৭৮ রানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে আলাউদ্দিন জেতালেন পারটেক্সকে
দলীয় ২ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন মিজানুর-রবিন। দুজনে যোগ করেন ২৫০ রান। মিজানুর মাঠ ছাড়লে জুটির পতন হয়। এরপর অধিনায়ক মাইশুকুর রহমান ১৭ ও অলক কাপালি ৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। রাহিম আহমেদ নেন ২ উইকেট।
এর আগে মাত্র ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন রাহিম। শাইনপুকুরের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৫ রান করেন তিনি। ৯৬ বলে ৫টি করে ৪টি ছক্কার মারে এই রান করেন রিনি। এ ছাড়া রায়ান রাফসান ৪৭ ও অনিক সরকার ৪০ রান করেন।
ব্রাদার্সের হয়ে আল আমিন হোসেন একাই নেন ৫ উইকেট। ১০ ওভারে ৫০ রান দিয়ে এই উইকেটগুলো নেন আল আমিন। এ ছাড়া ২ উইকেট নেন অলক কাপালি।
ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর ন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।