Samakal:
2025-09-18@10:17:55 GMT

বিচার বিভাগে পিছিয়ে নারীরা

Published: 8th, March 2025 GMT

বিচার বিভাগে পিছিয়ে নারীরা

সামাজিক সূচকে অগ্রগতি হলেও উচ্চ আদালতে নারী বিচারপতির সংখ্যা বাড়ছে না। উচ্চ আদালতে ৯৮ বিচারপতির মধ্যে নারী ১০ জন। তারা সবাই হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত। আপিল বিভাগে গত ছয় মাস ধরে কোনো নারী বিচারপতি নেই।

অন্যদিকে অধস্তন আদালতে কর্মরত ২ হাজার ১৮০ জন বিচারকের মধ্যে নারীর সংখ্যা ৬২৫। অর্থাৎ মোট বিচারকের ২৮ শতাংশ নারী। তারা সবাই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর মেধা তালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ পান। আনুপাতিক হারে বিচার বিভাগে নারীরা এখনও অনেকটা পিছিয়ে।

সুপ্রিম কোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালের আগে উচ্চ আদালতে কোনো নারী বিচারপতি ছিলেন না। বর্তমানে হাইকোর্টে কর্মরত নারী বিচারপতিরা হলেন– বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, বিচারপতি নাঈমা হায়দার, বিচারপতি ফাতেমা নজীব, বিচারপতি কাজী জিনাত হক, বিচারপতি ফাহমিদা কাদের, বিচারপতি মুবিনা আসাফ, বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা, বিচারপতি তামান্না রহমান, বিচারপতি নাসরিন আক্তার ও বিচারপতি সাথিকা হোসেন। তারা বিভিন্ন বেঞ্চে রিট, ফৌজদারি মোশনসহ এ-সংক্রান্ত মামলার শুনানি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করছেন।

এ ছাড়া অধস্তন আদালতে নারী বিচারকের সংখ্যা ৬২৫ জন। এর মধ্যে জেলা জজ ৬১, অতিরিক্ত জেলা জজ ৮৭, যুগ্ম জেলা জজ ১১২, সিনিয়র সহকারী জজ ৯৬ এবং সহকারী জজ ২৬৯ জন। 
শুধু বিচারের দায়িত্ব নয়, বিচার বিভাগ থেকে প্রেষণে আসা অনেক নারী বিচারক প্রশাসনিক দায়িত্ব সাফল্যের সঙ্গে সম্পাদন করছেন। যাদের অনেকে আছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন, আইন মন্ত্রণালয়, আইন কমিশন, লিগ্যাল এইডসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে। এদিকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আরও ১০২ জনকে সহকারী জজ পদে নিয়োগের জন্য মনোনীত করেছে সরকার। তাদের পদায়ন হয়নি এখনও।

দেশের ইতিহাসে আপিল বিভাগে প্রথম নারী বিচারপতির নাম নাজমুন আরা সুলতানা। হাইকোর্ট বিভাগ এবং অধস্তন আদালতেও প্রথম নারী বিচারক তিনি। ১৯৭৫ সালের শেষের দিকে প্রথম নারী বিচারক হিসেবে যোগ দেন। ২০০০ সালে প্রথমবারের মতো হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি পদে নিয়োগ পান। ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০১৭ সালের ৬ জুলাই তিনি অবসরে যান। পরে তিনি বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ছিলেন। আপিল বিভাগে আরও তিনজন নারী বিচারপতি বিভিন্ন সময় দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা হলেন– জিনাত আরা, কৃষ্ণা দেবনাথ ও কাশেফা হোসেন।

আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও বর্তমানে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান জিনাত আরা সমকালকে বলেন, উচ্চ আদালতে আরও নারী বিচারপতির নিয়োগ হওয়া দরকার। আপিল বিভাগে এখন একজন নারী বিচারকও নেই। হাইকোর্টেও সংখ্যার দিকে নারী বিচারক অনেক কম। তবে যাদেরই নিয়োগ দেওয়া হোক, তাদের সততা, নৈতিকতা ও যোগ্যতায় যেন ঘাটতি না থাকে। এর সঙ্গে স্বাধীন মানসিকতাকেও গুরুত্ব দিতে হবে। স্বাধীনভাবে বিচার করার মানসিকতা না থাকলে অন্যসব যোগ্যতা থাকলেও সেটা ফলপ্রসূ হবে না।
তিনি আরও বলেন, অধস্তন আদালতে মেয়েরা ভালো করছে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ হওয়ায় তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন নেই। তা ছাড়া তাদের মধ্যে নৈতিকতা ও সততার ঘাটতিও অনেকাংশে কম। আশা করছি, বিচার বিভাগে নারী বিচারকের সংখ্যা আরও বাড়বে।

নারী বিচারকদের সুবিধা-অসুবিধা, বিপদ-সংকট ইত্যাদি কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার জন্য ১৯৮৯ সালে গঠন করা হয় বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশন। এটি এখন অন্যান্য দেশের নারী বিচারকদের কাছেও পরিচিত সংগঠন। এই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফারজানা ইয়াসমিন সমকালকে বলেন, ‘বিচার বিভাগে অবকাঠামোগত উন্নয়নের ঘাটতি রয়েছে। এগুলো নিরসন হওয়া দরকার। আর গত কয়েক বছর ধরে বিচার বিভাগে নারীর সংখ্যা অনেকাংশে বাড়ছে। তারা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে মেধার ভিত্তিতে এ পেশায় আসছেন। উৎসাহ পেলে আগামীতে নারীর সংখ্যা আরও বাড়বে। আশা করছি, কয়েক বছরের মধ্যে মেধার ভিত্তিতে বিচার বিভাগে নারী ও পুরুষ সমান হারে নিয়োগ পাবেন।’

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব চ রপত র পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা 

সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ