বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অন্যান্য অনেক দেশে নারীদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেও বাংলাদেশে এখনো নারীরা নানা ধরনের বৈষম্য, সহিংসতা ও শোষণের শিকার হচ্ছেন। বর্তমানে দেশের নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

এ সময় রুহুল কবির রিজভীর পাশে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদসহ বিএনপির নারী নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে বিএনপি নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, উন্নয়ন এবং শোষণ ও নির্যাতন থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। বিএনপি বিশ্বাস করে, একটি নারীবান্ধব, নিরাপদ ও স্বাধীন সমাজ গড়ে তোলা প্রয়োজন। সেই সমাজে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার, সুরক্ষা ও মর্যাদা ভোগ করবেন।

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমরা যখন নারীর ক্ষমতায়ন, নিরাপত্তা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার কথা বলছি, তখন বাস্তবতা অত্যন্ত হতাশাজনক। সম্প্রতি দেশজুড়ে নারীদের প্রতি সহিংসতা, বৈষম্য ও অত্যাচারের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। সমাজে নারীদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য এখনো অনেক কাজ বাকি আছে।’

নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য ও নারীদের প্রতি সহিংসতা দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে, যা আমাদের জাতির জন্য উদ্বেগের বলে মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘এই কঠিন বাস্তবতায় বিএনপি দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, নারীদের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে এবং শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ‘দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে নারীরা যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, ঠিক তেমনি অনলাইনেও তাঁরা বিরূপ আচরণের শিকার হচ্ছেন। রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রী, নারী শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার নারীদের ইভটিজিং, শ্লীলতাহানি ও হেনস্তা করা হচ্ছে। ধর্ষণ ও নির্যাতন করে নারীদের হত্যা করা হচ্ছে।’

একের পর এক নারীকে হেনস্তা ও আক্রমণ এবং সামগ্রিক বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠছে, তা রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা ও সম্প্রীতির জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও মনে করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সামাজিক অবক্ষয়ের মাধ্যমে কেন আজ নারীদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং এর পেছনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, সেটা যাচাই করা প্রয়োজন।

রিজভী বলেন, এই অসভ্যতা ও সহিংসতার পেছনে কোনো উগ্র গোষ্ঠীর উসকানি বা মদদ থাকতে পারে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে এবং তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি অতিরক্ষণশীল রাষ্ট্র বানানো, যেন নারীরা নিজ দেশে অধিকারহীন হয়ে পড়েন।

রিজভীর ভাষ্য, অতীতের মতো ভবিষ্যতেও দেশের নারীরা সব সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। তাঁদের শক্তি, সাহস ও অবদান দেশের উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আর নারীদের সেই ক্ষমতায়নের রাজনৈতিক পাথেয় হিসেবে সব সময় পাশে থাকবে বিএনপি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

নোবিপ্রবির আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা স্থায়ী বহিষ্কার 

আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়াকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অশ্লীল ও শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করায় স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আরো পড়ুন:

জুলাই বিরোধিতা: ইবির ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’

আ.লীগে যোগ দেওয়া মুবিনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার 

সোমবার (৩ নভেম্বর) নোবিপ্রবির রেজিষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. তামজীদ হোসাইন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের  রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  

নোটিশে বলা হয়েছে, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত বিদেশে গমন করেন, যা সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর ধারা ২(চ) অনুযায়ী ‘পলায়ন’ ।

এছাড়া একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশ করায় ‘নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ,২০০১’ এর ধারা ৪৭(৫) এর স্পষ্ট লঙ্ঘন। 

নোটিশে আরো বলা হয়েছে, গত ২৮ মে  আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলে সেটির জবাব যথাযথ হয়নি। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি আপনাকে পুনরায় ৭ জুলাই বিজ্ঞ আইনজীবীর মতামত এবং ৩১ জুলাই প্রেরিত নোটিশের জবাব না দেয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর নোবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭ তম সভার আলোচ্যসূচি-১৮ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১ এর ৪৭(৮) ধারা অনুযায়ী এবং সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও (গ) অনুযায়ী নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সহকারী পরিচালক (সামরিক বরখাস্ত) পদ থেকে চূড়ান্ত বা স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো লেনদেন থাকলে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বিধি অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতির বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে থাকেন এই কর্মকর্তা।

ঢাকা/শফিউল্লাহ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ