খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। গত বছরের ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত তিনি আন্দোলনরত ক্লান্ত–শ্রান্ত শিক্ষার্থী ও জনতাকে পানি পান করাচ্ছিলেন। ‘ভাই, পানি লাগবে পানি’ বলে মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার দৃশ্য দেশবাসীর হৃদয় নাড়িয়ে দেয়। সেই মুগ্ধর স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের নামকরণ করা হয়েছে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ’।

আগামীকাল রোববার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ উদ্বোধন করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এর আগে গত ৫ আগস্টের পরপরই নির্মাণাধীন ওই ফটকের সামনে শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ লিখে দেন শিক্ষার্থীরা। সেটিই ফটকের নামকরণ করার জন্য দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। ‘বিজয় তোরণ’ হিসেবে ফটকটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছিল।

আগামীকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো.

আবদুল মজিদ, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নাজমুল আহসান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হারুনর রশীদ খান, ট্রেজারার অধ্যাপক মো. নূরুন্নবী এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ও মুগ্ধের জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ)। সভাপতিত্ব করবেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো মীর মুগ্ধর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ও বর্তমান উপাচার্য মো. রেজাউল করিম। ওই সভায় উপস্থিত থেকে মীর মুগ্ধর বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান (দীপ্ত) ও জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণ করেন।

সভায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়। ওই দাবিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় দাবি ছিল প্রধান ফটকের নাম শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া। অন্যান্য দাবির মধ্যে ছিল ১৮ জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও যথাযথ মর্যাদায় তা পালন করা, টিএসসির সামনে শহীদ মীর মুগ্ধর স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ ও স্মৃতিফলক নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কাছে মীর মুগ্ধ হত্যার বিচার চেয়ে আবেদন এবং এই আন্দোলনে সব শহীদের স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে জুলাই গণহত্যা নামে একটি স্মৃতি কর্নার করা।

পরবর্তী সময়ে মো. রেজাউল করিম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণের উদ্যোগ নেন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৩০তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের নাম শহীদ মীর মুগ্ধ তোরণ করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র রহম ন র স মরণ

এছাড়াও পড়ুন:

মনোনয়ন দৌড়ে এবারও হেরে গেলেন মনির খান

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মনির খান— যার কণ্ঠে প্রেম, ব্যথা আর প্রার্থনার সুরে ভেসেছে একটি প্রজন্ম। তিনবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই শিল্পী শুধু গানে নয়, রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মনির খান। ঝিনাইদহ-৩ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন এই কণ্ঠশিল্পী। কিন্তু শেষপর্যন্ত প্রার্থী তালিকায় জায়গা হয়নি তার। সেই আসনে দল মনোনয়ন দিয়েছে মেহেদী হাসান রনিকে।

আরো পড়ুন:

নির্বাচন: বিএনপির যে প্রার্থীদের সঙ্গে লড়বেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা

বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নেই তারকারা

মনোনয়ন না পেলেও মনির খান প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ইতিবাচকভাবে। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লেখেন, “অভিনন্দন মেহেদী হাসান রনি, ঝিনাইদহ-৩-এ বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী। শুভকামনা রইল।”

শিল্পীর এই পোস্টে প্রশংসা করেছেন ভক্তরা। রাজনীতিতেও তার সংযম ও সৌজন্যতা তুলে ধরেছেন অনেকেই।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারকাদের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও শেষপর্যন্ত বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের প্রার্থী তালিকায় কোনো শিল্পী বা অভিনেতার নাম নেই। মনির খানের পাশাপাশি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বেশি আলোচিত ছিলেন নায়ক উজ্জ্বল ও হেলাল খান, কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা ও বেবী নাজনীন।

ঢাকা/রাহাত/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ