যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার প্রাসাদের ঐতিহাসিক এলিজাবেথ টাওয়ারে (বিগ বেন) উঠে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়েছেন এক ব্যক্তি। ১৬ ঘণ্টা থেকে নেমে আসার পরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ।

পুলিশ আজ রোববার জানিয়েছে, গতকাল শনিবার এ ঘটনা ঘটে। তবে ওই ব্যক্তি বিগ বেনের চূড়া অবধি উঠতে পারেননি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ওই ব্যক্তি সেখানে উঠে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়েছেন। ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো (ফ্রি প্যালেস্টাইন) স্লোগান দিয়েছেন।

মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা ফায়ার ব্রিগেডসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করেছি এবং বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়োজিত করেছি। যাতে এ ঘটনার যত দ্রুত সম্ভব ইতি টানা যায়, জীবনের ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায়।’

জরুরি উদ্ধারকারী বিভাগের কর্মীরা একটি ক্রেন নিয়ে ওই ব্যক্তির কাছাকাছি পৌঁছান এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি নেমে আসেন বলে জানিয়েছে স্কাই নিউজ।

মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র এর আগে জানিয়েছিলেন, এলিজাবেথ টাওয়ারের এ ঘটনার বিষয়ে গতকাল গ্রিনিচ মান সময় ৭টা ২৪ মিনিটের দিকে জানতে পারেন তাঁরা।

স্কাই নিউজের প্রতিবেদনের তথ্য, এরপর গতকাল সকাল থেকেই ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ রাখা হয় যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবনে ভ্রমণের আয়োজনগুলো।

পরে পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার পর সেখানকার রাস্তাগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ