আশুলিয়ায় স্ত্রীর সামনে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালংকার লুট
Published: 9th, March 2025 GMT
ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে দোকান বন্ধের সময় স্ত্রীর সামনে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাত দলের সদস্যরা ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে ওই ব্যবসায়ীর স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে।
রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতদের হামলায় আহত ওই ব্যবসায়ীকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নিহত দিলীপ দাস (৪৮) সাভারের পাথালিয়া ইউনিয়নের গোপীনাথপুর দাসপাড়া গ্রামের দুলাল দাসের ছেলে। তিনি নয়ারহাট বাজারে দিলীপ স্বর্ণালয় নামের একটি সোনার দোকানের মালিক।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে আটটার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন দিলীপ দাস। এ সময় তাঁর স্ত্রী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। দোকানে তালা দেওয়ার সময় দৌড়ে এসে সেখানে তিন-চারজন উপস্থিত হয়। তারা একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দিলীপের কাছে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। বাধা দিতে গেলে দিলীপকে কুপিয়ে আহত করে। পরে তারা আরও কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেখান থেকে দ্রুত চলে যায়।
দিলীপ দাসের ফুফাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে দোকান বন্ধ করে দিলীপ বাসায় চলে গিয়েছিলেন। পরে ওষুধ কেনার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে আবার বাজারে আসেন। এ সময় পরিচিত একজনের কাছে দোকান থেকে স্বর্ণের চেইন বিক্রি করেন। পরে দোকান বন্ধ করে শাটার নামানোর সময় তিন-চারজন দিলীপকে কুপিয়ে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ব্যাগে ১৫-২০ ভরি স্বর্ণালংকার ছিল।’
দিলীপের স্ত্রী সরস্বতী দাস বলেন, ‘বাসায় যাওয়ার জন্য দোকান বন্ধ করে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে রওনা হয়। আমিও সাথে ছিলাম। তাকে কুপাইয়া সব নিয়ে গেছে।’
বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেরাজুর রেহান বলেন, রাত ১০টার দিকে মারাত্মক আহত অবস্থায় দিলীপ দাসকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর বুকে বড় ক্ষত ছিল। গালের ডান পাশে ও পিঠে ক্ষত ছিল। চিকিৎসা শুরুর পরপরই তিনি মারা যান। ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা গেছেন। তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হয়, লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়, অপারেশন থিয়েটারেও নেওয়া হয়। তবে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স বর ণ ল ক র ব যবস য় ককট ল
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।