কক্সবাজারে এক মার্কিন নারীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে শহরের হিলডাউন সার্কিট হাউসের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার মাত্র সাড়ে ৬ ঘণ্টার মাথায় অভিযুক্ত যুবক তারেকুল ইসলামকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আগেও থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। সে ‘চুইল্যা তারেক’ নামে পরিচিত। 

শ্লীলতাহানির শিকার এলিজাবেথ কিনেল (২৬) এর স্বামী কক্সবাজারে ইউএন (জাতিসংঘ) এজেন্সিতে কর্মরত আছেন। ঘটনার সময় এলিজাবেথ কিনেলের সঙ্গে অর্চনা মাল্লা নামের আরেকজন নারীও ছিলেন। 

কক্সবাজার পুলিশ সুপার সাইফুদ্দিন শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মিডিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, সকাল ১০টার দিকে ওই ঘটনা ঘটার পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কক্সবাজার শহরের ঝাউতলা এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারেকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

পুলিশ সুপার সাইফুদ্দিন শাহীন জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী এক শর্ট মেসেজের মাধ্যমে পুরো বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানান। 

ওই খুদে বার্তায় বলা হয়, এলিজাবেথ কিনেল ও অর্চনা মাল্লা আজ সকাল ১০টার দিকে শহরের শহীদ সরণি দিয়ে হাঁটছিলেন। তারা বুঝতে পারেন একজন যুবক তাদের অনুসরণ করছে। এটা বুঝতে পেরে তারা হিলডাউন সার্কিট হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। তখন তাদের অনিরাপদ মনে হচ্ছিল। তারা দাঁড়িয়ে গেলে যুবকটি এসে তাদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করে। হঠাৎ যুবকটি এলিভাবেথ কিনেলকে পেছন থেকে ঝাপটে ধরে এবং স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয়। পরে ওই যুবক দৌড়ে পালিয়ে যায়। 

খুদে বার্তায় ওই মার্কিন নারী যৌন হয়রানিকারী যুবকের শারীরিক অবয়ব তুলে ধরেন। তিনি লিখেন, ছেলেটি খাটো। হলুদ রঙের টি-শার্ট পরা ছিল। 

পুলিশ সুপার বলেন, মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই এসব ঘটনা ঘটে যায়। খুদে বার্তা পাওয়ার পর পুলিশ ওই যুবককে ধরতে অভিযান শুরু করে। মাত্র সাড়ে ৬ ঘণ্টা মাথায় তাকে ধরা সম্ভব হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীও ঘটনায় জড়িত যুবককে শনাক্ত করেছেন। 

অভিযুক্ত তারেকুল ইসলাম কক্সবাজার শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফরিদুল আলমের ছেলে। তার বিরুদ্ধে আগেও কক্সবাজার মডেল থানায় শ্লীলতাহানির মামলা রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র ক ল ইসল ম ঘটন র শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ