২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের কথা রয়েছে বাংলাদেশের। তবে প্রধান উপদেষ্টার নতুন বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে এলডিসি উত্তরণের অবেদন করা হয়েছিল। তাই মুখ্য সচিবকে প্রধান করে উত্তরণ অগ্রগতি মূল্যায়ন কমিটি করা হয়েছে। কমিটি জাতিসংঘের কাছে সময় পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করতে পারে। তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে তার প্রথম কর্মদিবসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে মন্ত্রণালয়ে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দেশ একটি অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যা এর আগে কখনো হয়নি। তৎকালীন সরকার ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের আবেদন করেছিল। তাই মুখ্য সচিবকে প্রধান করে উত্তরণ অগ্রগতি মূল্যায়ন কমিটি করা হয়েছে। কমিটি জাতিসংঘের কাছে সময় পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করতে পারে। এটা বাংলাদেশের অধিকার রয়েছে। তবে আবেদন করার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি আরও বলেন, অর্থ পাচার সহজে রোধ করা সম্ভব। দেশ থেকে কোথায় কী যাচ্ছে তার হিসাব স্বচ্ছতার সঙ্গে নিশ্চিত করা হলে পাচার বন্ধ হবে। তাছাড়া বাজেটে ঋণ ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। ড. ইউনূসের সুনামের ওপর ভিত্তি করে বেশ কিছু দেশ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আগ্রহ জানিয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহম দ এলড স এলড স

এছাড়াও পড়ুন:

গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও

রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।

গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।

পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো। 

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।” 

আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।” 

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।

ঢাকা/আমিরুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও