সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ও উপস্থাপক ফারজানা রুপাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

ফারজানা রুপাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.

আজিজুল হক।

আবেদনে বলা হয়, ফারজানা রুপা বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে আছেন। সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি এটিএন বাংলা টেলিভিশনে রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মেহেরুন রুনির সঙ্গে তার পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠতা ও যাতায়াত ছিল। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি টেলিভিশনে রিপোর্ট করেন বলে জানা যায়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার রহস্য উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার সম্ভবনা আছে। এটি বহুল আলোচিত হত্যা মামলা। এ মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে এবং বর্তমানে পিবিআই মামলা তদন্ত করছে। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ফারজানা রুপাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

সাগর সারোয়ার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙায় এবং মেহেরুন রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন তারা। এ সময় বাসায় ছিল তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সারোয়ার মেঘ।

এ ঘটনায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন রুনির ভাই নওশের আলম। মামলার আসামিরা হলেন—রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, কামরুল ইসলাম ওরফে অরুন, আবু সাঈদ, সাগর-রুনির বাড়ির দুই নিরাপত্তারক্ষী পলাশ রুদ্র পাল ও এনায়েত আহমেদ এবং তাদের বন্ধু তানভীর রহমান খান। তাদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ জামিনে আছেন। বাকিরা কারাগারে। 

ঢাকা/মামুন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

তেহরান থেকে এক কোটি মানুষ কীভাবে সরে যাবে

ইরানের রাজধানী তেহরান ছাড়ার চেষ্টা করছেন অনেক মানুষ। তবে গত কয়েক দিনের মতোই তেহরানের রাস্তাঘাট এখনো যানজটে ঠাসা।

বিবিসি পার্সিয়ানের প্রতিবেদক ঘোনচে হাবিবিয়াজাদ জানান, তিনি এমন একটি পরিবারকে চেনেন, যারা তেহরান থেকে রওনা হয়ে গন্তব্যে পৌঁছেছে ১৪ ঘণ্টা পর। অথচ এই যাত্রাপথ সাধারণত তিন ঘণ্টায় শেষ হওয়ার কথা।

এত সময় লাগলেও শেষ পর্যন্ত তেহরান থেকে বেরিয়ে আসতে পারায় পরিবারটি নিজেদের ‘ভাগ্যবান’ মনে করছে।

পরিবারটির সদস্যদের ভাষায়, ‘ভাগ্যক্রমে’ শেষ পর্যন্ত তাঁরা তেহরান থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।

তেহরানের বাসিন্দাদের আরও অনেকেই এমন কথা বলেছেন। তাঁরা রাজধানী থেকে বেরিয়ে আসতে পেরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। তবে তাঁদের অনেকে আবার উদ্বিগ্ন প্রিয়জনদের নিয়ে, যাঁরা এখনো তেহরান ছাড়তে পারেননি।

বিবিসির এই সাংবাদিক গত রাতে তাঁর এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তিনি তেহরান ছাড়তে পেরেছেন কি না।

জবাবে বন্ধু বলেন, ‘রাস্তা একেবারে আটকে আছে। এখন বেরোলে শুধু যানজটে আটকে থাকতে হবে। আর এই সময়ে তা খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।’

প্রথমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তেহরানের একটি অংশের বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়তে বলেন। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সবাইকে তেহরান ছেড়ে যেতে হবে।

ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার নজিরবিহীন সংঘাত পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। উভয় পক্ষ আকাশপথে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলের হামলায় ইরানে অন্তত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ২৪ জন।

তেহরানে তখন ভোর সাড়ে চারটা বাজে। তবু বহু মানুষ তখনো জেগে ছিলেন।
সাংবাদিক ঘোনচে হাবিবিয়াজাদ যে ইরানি গ্রুপ চ্যাটগুলোতে আছেন, সব কটিই এখন রূপ নিয়েছে রাজনৈতিক আলোচনার জায়গায়। সঙ্গে কোথায় কোথায় হামলা হচ্ছে, তা জানানোর প্ল্যাটফর্মও হয়ে উঠেছে সেগুলো।

একটি চ্যাট গ্রুপে একজন লিখেছেন, ‘আমি একদম বিধ্বস্ত-শরীরেও, মনেও। টানা চার রাত ঘুমাইনি।’

চ্যাট গ্রুপে আরেকজন জিজ্ঞেস করেছেন, ‘তেহরান থেকে এক কোটি মানুষ কীভাবে সরে যেতে পারে?’

এই প্রশ্নের কোনো উত্তর আসেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ