ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, “ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে অবকাঠামো উন্নয়ন অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নতুন ওয়ার্ডগুলোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই এলাকায় অনেক কাজ করতে হবে। উন্নয়ন কাজ ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে অনেক অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু নতুন ওয়ার্ড থেকে আমরা নামমাত্র রাজস্ব পাচ্ছি। অনেকের মধ্যে প্রশ্ন হচ্ছে আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা পাইনা, আমরা কেন ট্যাক্স দিবো? আমাদের তো আসলে আপনাদের ট্যাক্সের বিনিময়েই সেবাগুলো নিশ্চিত করতে হবে। আপনারা এ বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।”

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে গুলশান নগরভবনে সম্মেলন কক্ষে ডিএনসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে গণশুনানিতে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এসব কথা বলেন।

গণশুনানিতে নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের আওতাধীন স্কুলকলেজের শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, বাজার কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ও নেতা, সোসাইটির নেতা, যুবক ও ছাত্র প্রতিনিধি এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।

আরো পড়ুন:

স্ত্রী-কন্যাসহ খাইরুজ্জামান লিটনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা
ডিএনসিসিকে কারিগরি সহায়তা দেবে লন্ডনের টিএফএল

ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, “ডিএনসিসিতে পূর্বের ৩৬টি ওয়ার্ডের সঙ্গে নতুনভাবে আরও ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়েছে, ওয়াসা থেকে খালগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কিন্তু কোন লোকবল ও যান যন্ত্রপাতি পায়নি ডিএনসিসি। সিটি কর্পোরেশন ভাগ হওয়ার সময় যে লোকবল ছিল বর্তমানে তারচেয়ে আরো কমেছে। অনেকে অবসরে গেছেন, অনেকে মারা গেছেন। সীমিত লোকবল ও যান যন্ত্রপাতি দিয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষের সেবা নিশ্চিত করাও ডিএনসিসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। লোকবল নিয়োগের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি।”

একজন বাসিন্দার প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, “সেবা প্রদানে ডিএনসিসির কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারী অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে সবাইকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছি। কোনো অনিয়ম, দুর্নীতির প্রমাণ পেলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মশা নিধন কার্যক্রম সম্পর্কে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, “মশা নিধন সিটি কর্পোরেশনের একটি বড় চ্যালেঞ্জিং কাজ। সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে মশা নিধন কার্যক্রম সম্ভব নয়। সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি জনগণের সহযোগিতা ও সচেতনতা প্রয়োজন। আমাদের সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা নিয়মিত মশার ওষুধ দিচ্ছে, পরিচ্ছন্ন কর্মীরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবুও মশা নিয়ন্ত্রণে নেই। কারণ অনেক ক্ষেত্রে আমাদের কর্মীরা বিভিন্ন বাসা বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে না, নিরাপত্তাজনিত কারণে আমাদের কর্মীদেরকে বিল্ডিংয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়না। আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি দুই বাড়ির মাঝখানে জানালা দিয়ে ময়লা ফেলে দিচ্ছে। বাড়ির গেটের ভিতরে জানলা দিয়ে ময়লা ফেলছে। যেগুলো আমাদের কর্মীরা পরিষ্কার করতে পারে না এবং মশক কর্মীরা সেসব জায়গায় লার্ভিসাইডিং করতে পারে না। ফলে বাসাবাড়ির ভিতরেই মশা উৎপাদন হচ্ছে। অবশ্যই নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে।নিজেদের বাড়ির বাউন্ডারির ভিতরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।”

এ সময় তিনি আরো বলেন, “আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা অনেক ক্ষেত্রেই বাড়িতে বা ভবনে লার্ভা পেলে মোবাইল কোর্টে আর্থিক জরিমানা করছে কিন্তু এতে স্থায়ী সমাধান হবে না। নিজেরা সচেতনতা না হলে বারবার এই অভিযান করেও মশা নিধন সম্ভব নয়। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। মশা নিধনের পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা নিয়েও আমরা কাজ করছি। আমাদের মহাখালীতে যে হসপিটাল রয়েছে সেখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে পারবে। সেবার মান বাড়ানো জন্য আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিব।”

নতুন এলাকায় খাস বা সরকারি সংস্থার খালি জমিতে মাঠ ও পার্ক নির্মাণ করা হবে বলে উল্লেখ করে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, “নতুন ওয়ার্ডে অপরিকল্পিত উন্নয়ন শুরু হয়েছিল। যে যার মতো করে ভবন নির্মাণ করেছে। ড্যাপে অনেক জায়গায় খালি দেখানো রয়েছে। রাজউকের সাথে সমন্বয় করে সেগুলো রক্ষা করবো। ড্যাপে নির্ধারিত মাঠ, পার্ক ও খালি জায়গায় কেউ কোন ধরনের অবকাঠামো ভবন নির্মাণ করতে পারবে না। যেখানে খাস জমি আছে সেখানে আমরা জেলা অফিসের সাথে এবং অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলাপ করে মাঠ ও পার্ক করে দিব।”

গণশুনানিতে অন্যান্যের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো.

কামরুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল  ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এ বি এম সামসুল আলম, ডিএনসিসির সচিব মামুন-উল-হাসান এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

ঢাকা/এএএম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এনস স ন শ চ ত কর ড এনস স র কর মকর ত ব যবস থ র কর ম কর ম র আম দ র অন ক ক ল কবল

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ