দেশকে মুক্ত করার লক্ষ্যে যে বলিদান, তা বৃথা যেতে দেওয়া হবে না
Published: 11th, March 2025 GMT
আওয়ামী দুঃশাসনের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার লক্ষ্যে যে বলিদান, তা বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ যে নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছে, তা যদি ব্যর্থ হয়, তবে তার দায়ভার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বহন করতে হবে। মঙ্গলবার শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রতিবাদী সমাবেশে এ কথাগুলো উঠে আসে।
সারা দেশে ধর্ষণ, নিপীড়ন, ডাকাতি, ছিনতাই ও মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জোট গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য প্রতিবাদী সমাবেশ ও গানের মিছিলের আয়োজন করে।
সমাবেশে জোটের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা কার্টুন ও ছবি এঁকে এবং গান-আবৃত্তি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে চলমান ঘটনাগুলোর প্রতিবাদ জানান।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু, মাওলানা ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, প্রগতি লেখক সংঘের দীনবন্ধু দাশ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনসহ জোটের অন্যান্য দলের সদস্যরা।
বক্তারা দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবি করেন।
সমাবেশে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন কবি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া। মুক্ত ক্যানভাসে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী ছবি আঁকেন শিল্পীরা। পরে শাহবাগ থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্য পর্যন্ত গানের মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ‘জাগো নারী জাগো বহ্নিশিখা’, ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’, ‘লড়াই করো লড়াই করো, যত দিন না বিজয়ী হও’ প্রভৃতি গান গেয়ে জোটের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা গানের মিছিলে অংশ নেন। মিছিলে শিল্পীদের আঁকা ছবিসংবলিত ক্যানভাস বহন করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।
বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।
ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।