আওয়ামী দুঃশাসনের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার লক্ষ্যে যে বলিদান, তা বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ যে নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছে, তা যদি ব্যর্থ হয়, তবে তার দায়ভার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বহন করতে হবে। মঙ্গলবার শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রতিবাদী সমাবেশে এ কথাগুলো উঠে আসে।

সারা দেশে ধর্ষণ, নিপীড়ন, ডাকাতি, ছিনতাই ও মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জোট গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য প্রতিবাদী সমাবেশ ও গানের মিছিলের আয়োজন করে।

সমাবেশে জোটের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা কার্টুন ও ছবি এঁকে এবং গান-আবৃত্তি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে চলমান ঘটনাগুলোর প্রতিবাদ জানান।

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু, মাওলানা ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, প্রগতি লেখক সংঘের দীনবন্ধু দাশ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনসহ জোটের অন্যান্য দলের সদস্যরা।

বক্তারা দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবি করেন।

সমাবেশে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন কবি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া। মুক্ত ক্যানভাসে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী ছবি আঁকেন শিল্পীরা। পরে শাহবাগ থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্য পর্যন্ত গানের মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ‘জাগো নারী জাগো বহ্নিশিখা’, ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’, ‘লড়াই করো লড়াই করো, যত দিন না বিজয়ী হও’ প্রভৃতি গান গেয়ে জোটের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা গানের মিছিলে অংশ নেন। মিছিলে শিল্পীদের আঁকা ছবিসংবলিত ক্যানভাস বহন করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা থাকাকালে তাঁর ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বের উল্টো যাত্রা ঘটল: অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ (তিন শূন্য) তত্ত্ব সমর্থন করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। কিন্তু অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে তার উল্টো যাত্রা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি থাকা অবস্থায় তাঁর থ্রি জিরো তত্ত্বের যে উল্টো যাত্রাটা ঘটল, এটা তাঁর খেয়াল করা দরকার। আমরা চাই, থ্রি জিরো তত্ত্বটাই অগ্রসর হোক।’

সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেন। ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যেভাবে হতে পারে’ শিরোনামে যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও প্রথম আলো।

বৈঠকে অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের “থ্রি জিরো” (তিন শূন্য) তত্ত্ব সারা পৃথিবীতে পরিচিত। আমি এটা খুবই সমর্থন করি যে শূন্য কার্বন নিঃসরণ, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য দারিদ্র্য। কিন্তু পুরো যাত্রাটা তো হচ্ছে উল্টো দিকে। অধ্যাপক ইউনূসের একটা সুযোগ ছিল যে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে থ্রি জিরো তত্ত্বের বাস্তবায়নের একটা মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে দাঁড় করানোর কিছু চেষ্টা করা। কিন্তু আমরা দেখছি, কীভাবে কার্বন নিঃসরণ আরও বাড়ে, সেটার একটা চেষ্টা চলছে। গত ১০ মাসে লক্ষাধিক বেকারত্ব বেড়েছে শুধু কারখানা বন্ধ করার কারণে আর দারিদ্র্য বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ লাখ। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি থাকা অবস্থায় তাঁর থ্রি জিরো তত্ত্বের যে উল্টো যাত্রাটা ঘটল, এটা তো তাঁর একটু খেয়াল করা দরকার। এতে তো আমরা খুশি না। আমরা তো চাই যে থ্রি জিরো তত্ত্বটাই অগ্রসর হোক।’

‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যেভাবে হতে পারে’ শীর্ষক গোলটেবিলে আলোচকদের একাংশ। সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ