ভেঙে দেওয়া হলো মেঘনা, এনআরবি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ
Published: 12th, March 2025 GMT
চতুর্থ প্রজন্মের মেঘনা ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আজ তিন ব্যাংককে চিঠি দিয়ে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সুশাসন ফেরাতে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। তবে এসব ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি এখনো ভালো। এই ব্যাংক তিনটি ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করে। তখন রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, আগামীকাল নতুন পর্ষদ গঠন করা হবে।
জানা যায়, মেঘনা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এইচ এন আশিকুর রহমান। এই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের রয়েছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী পরিবার ও স্বার্থসংশ্লিষ্টরা। ব্যাংকটির বেশির ভাগ শেয়ার এখন তাঁদের হাতে। পরিচালকদের অনেকে দেশের বাইরে।
এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন আল হারামাইন পারফিউমের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান। এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রাশিয়া আওয়ামী লীগ নেতা এস এম পারভেজ তমাল। সরকার বদলের পর তাঁরা দেশে ফিরছেন না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, তিন ব্যাংকের মধ্যে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয়েছে আলী হোসেন প্রধানিয়াকে। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ব্যাংক তিনটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক, সাবেক ব্যাংকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, হিসাববিদ ও আইনজীবীর পাশাপাশি ব্যাংকের দুজন করে শেয়ারধারী পরিচালককে রাখা হয়েছে। অন্য দুটি ব্যাংক কাল বৃহস্পতিবার নিজেরাই চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে নেবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ
বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আরো পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল
ইউনূস-তারেক বৈঠক
রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে: যৌথ বিবৃতি
বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, “বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।”
বৈঠকে লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সব রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।”
ঢাকা/হাসান/মাসুদ