চলছে বাবা মন্টু দাসের শেষকৃত্য, হঠাৎ হঠাৎ চিৎকার ও কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে কালিবাড়ী এলাকা। 

‘‘বাবাকে বলেছিলাম মামলা করেও বিচার পাবো না, মামলার দরকার নাই। এখন বাবাকেই হারালাম, মান সম্মান গেলো।’’ 

রাইজিংবিডির প্রতিবেদকের সাথে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন বরগুনার কালিবাড়ী এলাকায় অপহরণের পর ধর্ষণের শিকার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী (১৩)। 

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাতে নিজ বাড়ির পিছন থেকে ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থীর বাবা মন্টু দাসের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থী রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমার শুরু থেকেই ভয় হচ্ছিল। মনে হয়েছিল বিচার পাবো না, উল্টো মানুষ জানবে। তাই বাবাকে নিষেধ করেছিলাম মামলা করতে।”

এদিকে দেড় মাসের শিশু কোলে নিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে স্বামী মন্টু দাসের শেষকৃত্য দেখছেন তার স্ত্রী। তার পাশে চার বছরের অবুঝ আরেক কন্যা শিশু। মন্টু দাসের স্ত্রী কখনো চিৎকার দিয়ে কান্না করছেন আবার কখনো জ্ঞান হারাচ্ছেন। 

স্বজন ও প্রতিবেশিরা জানান, মন্টু দাস একটি মুরগির দোকানে কর্মচারী ছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। তারা এখন কীভাবে দিনযাপন করবে? তাদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা উচিৎ সরকারের। এই পরিবার পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। তিনটি কন্যা সন্তান নিয়ে দুবেলা খাবার সামর্থ তাদের নেই। 

উপকূলীয় দরিদ্র পরিবার উন্নয়ন সংগঠনের নিবার্হী পরিচালক নুসরাত সিনথিয়া বলেন, “সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর এই পরিবারটিকে আইনের সহায়তার পাশাপাশি তাদের স্থায়ীভাবে খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করা উচিত।” 

তিনি আরো বলেন, “এই ঘটনার পর থেকে এই পরিবারটি ভীত হয়ে আছে। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও প্রশাসনের বিবেচনা করা উচিত।”

বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম রাইজিংবিডিকে বলেন, “অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার পরে পরিবার যে হুমকিতে রয়েছে এটি পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়নি। তারপরেও যা হলো এটি খুবই কষ্টকর। এই ঘটনাটি সুক্ষ্মভাবে নজরদারি করছেন জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আমরা সবদিক বিবেচনা করে পরিবারটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।” 

এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

ঢাকা/ইমরান/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার

চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার একটি দোকান থেকে নুরুল আবছার (২৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় একদল মুখোশধারী ব্যক্তি। আজ বুধবার সকাল সাতটায় তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি ছাড়া পান।

উদ্ধারের পর পটিয়া থানা প্রাঙ্গণে অপহরণের শিকার নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্যাংকে চাকরি করতেন। সম্প্রতি তাঁর চাকরি চলে যায়। এরপর পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার সাহিত্য বিশারদ সড়কে মুরগির দোকান দেন। প্রতিদিনের মতো আজ সকালে দোকান খোলেন তিনি। এ সময় তিন থেকে চারজন মুখোশধারী লোক ধারালো অস্ত্রের মুখে তাঁকে ধরে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়। তারা তাঁর পকেটে থাকা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে, পরে ১৭ লাখ এনে দিতে বলেন। তাঁকে চন্দ্র কালারপোল নামের নির্জন এলাকায় নিয়ে অপহরণকারীরা তাঁকে মারধরের পাশাপাশি ছুরিকাঘাতও করেন।

পটিয়া থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ চন্দ্র দে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাঁকে উদ্ধারের তৎপরতায় নামে। পরে চন্দ্র কালারপোল এলাকায় পুলিশ গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার