বাংলাদেশের ঋণমান কমাল মুডিস, ব্যাংক খাত নিয়ে শঙ্কা
Published: 13th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়েছে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস। আগে ঋণমান ছিল ‘বি-ওয়ান’, এখন তা নেমে এসেছে ‘বি-টু’ পর্যায়ে। এতে দেশের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’ হয়ে গেছে।
গতকাল বুধবার প্রকাশিত মুডিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্পদের মানের অবনতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
চারটি কারণে রেটিং কমিয়েছে মুডিস। সংস্থাটির মতে, অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি বাড়ছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি চরমে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা, পোশাক খাতের সরবরাহ শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা হ্রাস অর্থনৈতিক মন্দার কারণ হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫ মাসের ব্যবধানে নীতিগত সুদের হার ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করেছে। তবে ২০২৫ সালেও মূল্যস্ফীতি উচ্চমাত্রায়, প্রায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশে থাকার আশঙ্কা করছে মুডিস।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমছে
মুডিস জানায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমছে। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.
ব্যাংকগুলোর সমস্যা বাড়ছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণের হার ১৭ শতাংশ, যা ৯ মাস আগে ৯ শতাংশ ছিল।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন পরিস্থিতি নেতিবাচক (-২.৫ শতাংশ), যা বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় নিচে। সরকার নতুন করে টাকা না দিলে এসব ব্যাংকের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
বিনিয়োগ কমতে পারে
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সুদের হার ৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খেলাপি ঋণ কমাতে ২০২৫ সালের এপ্রিলে কঠোর নিয়ম আসছে। তারল্য সংকট এড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সহায়তা দেবে।
ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন হতে পারে। পণ্যের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে। ব্যবসায় বিনিয়োগ কমতে পারে। চাকরি বাজারে প্রভাব পড়তে পারে।
মুডিস বলছে, দেশের ব্যাংক খাত এখন কঠিন সময় পার করছে। সরকারের সহায়তা ছাড়া ব্যাংকগুলোর জন্য সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়া-বেলারুশের সামরিক মহড়া চলছিল, ‘অবাক করে দিয়ে’ হাজির মার্কিন কর্মকর্তারা
রাশিয়া ও বেলারুশের যৌথ সামরিক মহড়া চলছে। এই মহড়া দেখতে বেলারুশে হাজির হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা। মার্কিনদের উপস্থিতিকে ‘অবাক করে দেওয়ার মতো’ বলে উল্লেখ করেছে বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এই কর্মকর্তারা নিজেদের ‘আগ্রহের যেকোনো বিষয়’ দেখতে পারেন বলে জানিয়েছেন বেলারুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর খ্রেনিন।
রাশিয়া ও বেলারুশের যৌথ এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাপাদ–২০২৫’। গত শুক্রবার থেকে নিজেদের সীমানার মধ্যে মহড়াটি শুরু করেছে দুই দেশ। এমন সময় এ মহড়া শুরু করা হলো, যখন দুই দিন আগেই পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করা রাশিয়ার ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এ নিয়ে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর দেশগুলোতে উত্তেজনা বেড়েছে।
বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতি অনুযায়ী, সোমবার যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৩টি দেশের প্রতিনিধিরা মহড়া দেখতে বেলারুশে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ন্যাটোর দুই সদস্যদেশ—তুরস্ক ও হাঙ্গেরির প্রতিনিধিরাও। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জাপাদ–২০২৫ মহড়ার আরেকটি সকাল এভাবে শুরু হবে, তা কে–ই বা ভেবেছিল?’
বিদেশি কর্মকর্তাদের মহড়ায় উপস্থিত থাকার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তাকে ভিক্টর খ্রেনিনের সঙ্গে হাত মেলাতে দেখা যায়। বেলারুশে আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদও জানান তাঁরা। এ সময় মার্কিন কর্মকর্তাদের খ্রেনিন বলেন, ‘আপনাদের আগ্রহের সবকিছু দেখাব আমরা। আপনারা যা চান।’
মহড়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর দুই কর্মকর্তা