কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে উত্তরপত্রসহ প্রশ্ন সরবরাহের অভিযোগে বিভাগের শিক্ষক কাজী এম আনিছুল ইসলামকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়াও অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড.

জাকির ছায়াদউল্লাহ খানকে আহ্বায়ক ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন– প্রকৌশল অনুষদের ডিন ড. মো. সাইফুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন এবং সহকারী প্রক্টর ড. নাহিদা বেগম।

গতকাল বুধবার রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। রেজিস্ট্রার অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্বদ্যিালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম আনিছুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পর্যবেক্ষণপূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন প্রণয়ন এবং সুপারিশসহ রিপোর্ট দাখিলের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আনিছুল ইসলামকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটিসহ ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এর আগে একটি উড়ো মেইলের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ আসে। অভিযোগে বলা হয়, ওই বিভাগের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষক কাজী এম আনিছুল ইসলামের ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। তিনি তাঁকে একাধিকবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে সহযোগিতা করেছেন। মেইলে সেই শিক্ষার্থীর করা অভিযোগের সপক্ষে পর্যাপ্ত নথিপত্রও যুক্ত করা হয়। এ ঘটনায় বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলাকালে তিনি অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের বাইরে থাকবেন।

এ বিষয়ে কাজী এম আনিছুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আমার কাছ থেকে কোনো স্টেটমেন্ট চাওয়া হলে আমি তা দেব।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ