বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল পেমেন্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ভিসা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কার্ডধারীর জন্য বিশেষ ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দিয়েছে। ক্যাম্পেইনের আওতায় দেশজুড়ে সব ভিসা কার্ডধারী আকর্ষণীয় অফার উপভোগ করার সুযোগ পাবেন। রমজান, স্বাধীনতা দিবস, ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের আনন্দ আরও বাড়িয়ে তুলতে গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া এ ক্যাম্পেইন আগামী ৩১ মে পর্যন্ত চলবে।
ভিসা জানিয়েছে, ক্যাম্পেইনটিতে ভিসা কার্ডধারীরা অ্যাক্টিভেট অ্যান্ড উইন, ট্যাপ অ্যান্ড উইন ও স্পেন্ড অ্যান্ড উইন– তিনটি ভিন্ন অফারের সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। ‘অ্যাক্টিভেট অ্যান্ড উইন’ অফারটি পেতে গ্রাহককে কমপক্ষে ৫০০ টাকার একটি লেনদেন করতে হবে। এর মাধ্যমে ১৫০ টাকার ফুডপ্যান্ডা ভাউচার জেতার সুযোগ রয়েছে। ‘ট্যাপ অ্যান্ড উইন’ অফারটি পেতে ভিসা কার্ডধারীকে কমপক্ষে ১৫টি ‘ট্যাপ অ্যান্ড পে’ লেনদেন (প্রতিটি লেনদেন ৫০০ টাকা বা তার বেশি) সম্পন্ন করতে হবে। সফলভাবে শর্ত পূরণ করলে ৫০০ টাকার ফুডপ্যান্ডা ভাউচার পাওয়া যাবে। ‘স্পেন্ড অ্যান্ড উইন’ অফারটি পেতে গ্রাহককে ক্যাম্পেইনের সময় যত বেশি সম্ভব লেনদেন করতে হবে। সেখান থেকে শীর্ষ ১০০ খরচকারী পাবেন ১৫ হাজার টাকার ফুডপ্যান্ডা ভাউচার।
এ বিষয়ে ভিসা বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘আমরা আমাদের কার্ডধারীর জন্য প্রতিটি মুহূর্ত আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলতে চাই। সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, উৎসব ও ঐতিহ্যে পরিপূর্ণ বাংলাদেশ। আমরা এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এই আনন্দ কার্ডধারীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চাই। ডিজিটাল লেনদেনকে সহজ ও নিরাপদ করতে আমরা সব সময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর এ উৎসবের মুহূর্তে বিশেষ অফার আনতে পেরে আমরাও উচ্ছ্বসিত। ফুডপ্যান্ডার সঙ্গে এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা এই আনন্দকে আরও ছড়িয়ে দিতে চাই। রমজানের শপিং থেকে শুরু করে ঈদের প্রস্তুতি হোক বা পহেলা বৈশাখ উদযাপন– ভিসা প্রতিটি উৎসবকে আনন্দদায়ক করে তুলতে আপনাদের পাশে আছে।’
ভিসা আরও জানিয়েছে, নতুন এই ক্যাম্পেইন আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, ক্যাশলেস লেনদেন ও নির্বিঘ্ন পেমেন্ট ব্যবস্থার প্রতি ভিসার প্রতিশ্রুতিই পুনর্ব্যক্ত করে, যা ডিজিটাল পেমেন্টের সুবিধা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক য ম প ইন র অ য ন ড উইন ল নদ ন আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
মার্জিন ঋণ নিতে বিনিয়োগ লাগবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ নিতে হলে বিনিয়োগ থাকতে হবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা। এছাড়া থাকতে হবে নিয়মিত আয়ের উৎস। আর বিনিয়োগের ৬ মাসের আগে ঋণ পাবে না কোনো বিনিয়োগকারী। একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড এবং কোম্পানির হিসাবেও মার্জিন ঋণ দেওয়া হবে না। চূড়ান্ত মার্জিন ঋণ নীতিমালায় এসব সুপারিশ করেছে পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মার্জিন রুলস- ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত সুপারিশ প্রসঙ্গে এসব তথ্য তুলে ধরেন পুঁজিবাজার টাস্কফোর্সের সদস্যরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন এবং পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপের সদস্য প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান।
টাস্কফোর্সের সদস্যরা বলেন, পুঁজিবাজার অংশীজনদের সাথে আলোচনা করেই সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে টাস্কফোর্স। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর ৩ মাসের আগে মার্জিন ঋণ না দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে, মার্জিন নিয়ে শেয়ারবাজারে কারসাজি বন্ধ হবে। মার্জিন ঋণ নিয়ে সুশাসন না থাকায় বিপুল অংকের নেগেটিভ ইক্যুইটি সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে বিনিয়োগকারীর পাশপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পুঁজিবাজার। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং মার্জিন খারাপ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হয়েছে। যে কারণে অনেক বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে গেছে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা টাস্কফোর্সের মূল্য উদ্দেশ্য।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, অনেক স্টেকহোল্ডার দাবি করছেন তাদের সাথে বসা হয়নি। অথচ আমরা দেখলাম তাদের সাথে আমরা ৩ বারও বসে ফেলেছি। তবে কেন এরকম মিস কমিউনিকেশন। আমরা অংশীজনদের বাহিরেও যারা বাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ তাদের সাথেও আমরা বসেছি। এরপরেও যদি মনে হয় আমরা কিছু বাদ দিয়েছি বা গ্যাপ ছিল, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে জানালে তা আমরা যুক্ত করে দিব। তবে অংশীজনদের থেকে বেশি আমরা সাধারণ মানুষদের থেকে অনেক কিছু পেয়েছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, প্রতিদিন পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে। যার কারণ বাজার অচল অবস্থায় চলে গেছে। সে অবস্থাটাকে মাথায় রেখে আমরা চিন্তা করেছি, এর অন্যতম কারণ হলো মার্জিন রুলস। কারণ মার্জিন রুলসটা যদি প্ল্যান করে দেওয়া হতো, গভর্নেন্সটা যদি সঠিক থাকতো, তাহলে এ ধরনের অবস্থা তৈরি নাও হতে পারতো। তাই মার্জিন রুলসকে আমরা টপ প্রায়োরিটি আইটেম ধরেছি। পৃথিবীতে মার্জিন রুলসকে শর্টটার্ম ওয়ে হিসেবে নেওয়া হয়। কোথাও কোথাও ১:৩/৪ রেশিওতে মার্জিন ঋণ দেওয়া হচ্ছে৷ এগুলা কিভাবে হয়েছে? এরপর বাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি ক্রিয়েট হয়েছে। আমরা চাচ্ছি এই জিনিসগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি বাজারে না হয়। মার্জিন নিয়ে আর গ্যামব্লিং করা যাবেনা। মার্জিন নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেষ করে দেয়া হয়েছে। এতো পরিমাণ নেগেটিভ ইক্যুইটি না থাকলে বাজারের আজ এই পরিস্থিতি হতো না।
হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন বলেন, আমাদের কাজে সহযোগিতা করেছে ফোকাস গ্রুপ। মূল কাজ করেছে টাস্কফোর্স। আমরা কাজ করতে যেয়ে পাবলিকের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকেও পেয়েছি, তবে পাবলিক থেকে পরামর্শ বেশি এসেছে। এটা খুব ভালো বিষয়। কারণ যত বেশি পরামর্শ আসবে, আমরা তত বেশি রিফাইন করার সুযোগ পাব।
সংবাদ সম্মেলনে একটি উপস্থাপনায় পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপের সদস্য প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আজকে আমার খুবই ভালো লাগছে যে, এই প্রথম বাংলাদেশে আইনি ফরমেশন করতে যাচ্ছি, যেখানে ব্রেইন স্টর্মিং ড্রাফটিং হয়েছে গ্রাউন্ড লেভেল থেকে। এ মার্কেটে যারা কাজ করেন, তাদের আইডিয়াগুলো নিয়েই ড্রাফট করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বিএসইসির ওয়ার্কিং টিমের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। এছাড়া মার্কেটের বড় বড় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব নিয়ে মার্জিন রুলস- ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত সুপারিশ তৈরি করেছি।
এর আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ স্বাক্ষরিত আদেশে ‘পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স’ গঠন করা হয়। গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা আকবর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন।
ঢাকা/এনটি/ফিরোজ