নড়াইলে প্রতিপক্ষের হামলায় প্রবাসী নিহত
Published: 13th, March 2025 GMT
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় সৌদিপ্রবাসী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার নড়াগাতী থানার চরশুকতাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম আকরাম শেখ (৪৫)। তিনি নড়াগাতী থানার চরশুকতাইল গ্রামের হেকমত শেখের ছেলে। দুই মাস আগে সৌদি আরবে কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে তিনি বাড়িতে এসেছিলেন।
নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরশুকতাইল গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ আছে। এর মধ্যে একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন আনসার জমাদ্দার এবং অন্যটির নেতৃত্ব দেন হেকমত শেখ। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই বিরোধ চলে আসছে। গতকাল রাতে হেকমত শেখের ছেলে আকরাম শেখ এলাকার একটি চায়ের দোকানে যান। সেখানে প্রতিপক্ষ আনসার জমাদ্দারপক্ষের ১৫ থেকে ২০ জন আকরাম শেখকে কুপিয়ে জখম করেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, আকরামের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ লোকজন অভিযুক্তপক্ষের বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত ব্যক্তির খালাতো ভাই আমানত ইসলাম বলেন, আকরাম আট বছর সৌদি আরব ছিলেন। দুই মাস আগে ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন। এক মাস পর আবার তাঁর সৌদি আরবে চলে যাওয়ার কথা ছিল। তাঁর বাবা হেকমত শেখ এলাকার একটি পক্ষকে নেতৃত্ব দেন। তবে এর সঙ্গে আকরাম জড়িত ছিলেন না।
তকাল মুঠোফোনে নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অতর্কিত হামলায় আকরামের মৃত্যুর পর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত আছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ কমত শ খ এল ক র আকর ম ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।