নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় সৌদিপ্রবাসী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার নড়াগাতী থানার চরশুকতাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আকরাম শেখ (৪৫)। তিনি নড়াগাতী থানার চরশুকতাইল গ্রামের হেকমত শেখের ছেলে। দুই মাস আগে সৌদি আরবে কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে তিনি বাড়িতে এসেছিলেন।  

নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরশুকতাইল গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ আছে। এর মধ্যে একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন আনসার জমাদ্দার এবং অন্যটির নেতৃত্ব দেন হেকমত শেখ। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই বিরোধ চলে আসছে। গতকাল রাতে হেকমত শেখের ছেলে আকরাম শেখ এলাকার একটি চায়ের দোকানে যান। সেখানে প্রতিপক্ষ আনসার জমাদ্দারপক্ষের ১৫ থেকে ২০ জন আকরাম শেখকে কুপিয়ে জখম করেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, আকরামের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ লোকজন অভিযুক্তপক্ষের বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহত ব্যক্তির খালাতো ভাই আমানত ইসলাম বলেন, আকরাম আট বছর সৌদি আরব ছিলেন। দুই মাস আগে ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন। এক মাস পর আবার তাঁর সৌদি আরবে চলে যাওয়ার কথা ছিল। তাঁর বাবা হেকমত শেখ এলাকার একটি পক্ষকে নেতৃত্ব দেন। তবে এর সঙ্গে আকরাম জড়িত ছিলেন না।

তকাল মুঠোফোনে নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অতর্কিত হামলায় আকরামের মৃত্যুর পর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত আছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ কমত শ খ এল ক র আকর ম ল কজন

এছাড়াও পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

আরো পড়ুন:

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়

এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।

তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।

পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।

এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।

আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।

এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ