জয়পুরহাট শহর ছাত্রদলের নেতা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে জয়পুরহাট রেলস্টেশনের দক্ষিণে রেললাইনের ওপর থেকে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন।

আহত পিয়াল আহম্মেদ (৩২) জয়পুরহাট শহর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি শহরের ইসলামনগর মহল্লার বাচ্চু মিয়ার ছেলে।

পিয়াল আহম্মেদকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জয়পুরহাট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মামুনুর রশিদ প্রধান অভিযোগ করেছেন, জয়পুরহাট পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে পিয়ালের ওপর হামলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেনের ভাষ্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় মানুষের বরাত দিয়ে থানা–পুলিশ জানায়, পিয়াল আহম্মেদ প্রতি রাতেই জয়পুরহাট রেলস্টেশন এলাকায় আড্ডা দিতেন। গতকাল রাতেও তিনি ওই এলাকায় ছিলেন। রাত ১১টার দিকে জয়পুরহাট পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন রেলস্টেশনে আসেন। পূর্ববিরোধের জের ধরে তাঁরা পিয়ালকে কুপিয়ে জখম করেন। পরে লোকজন পিয়ালকে উদ্ধার করে দিবাগত রাত ১২টার দিকে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাঁকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জয়পুরহাট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মামুনুর রশিদ প্রধান আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পিয়াল আহম্মেদকে পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্ব কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। পিয়াল এখন অনেকটাই শঙ্কামুক্ত। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’

জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম বলেন, ছাত্রদল নেতা পিয়ালকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনসহ অন্যরা জড়িত। রেলস্টেশনে পাশে ও রেললাইনের ওপর ওই ঘটেছে। সান্তাহার রেলওয়ে থানায় মামলা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প য় ল আহম ম দ ছ ত রদল র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ