শেখ হাসিনার ৫৭ বার ফাঁসি হওয়া উচিৎ: আমান
Published: 13th, March 2025 GMT
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দায়ে শেখ হাসিনার ৫৭ বার ফাঁসি হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোরে একটি হোটেলে খুলনা বিভাগের ছয় জেলার সাবেক সংসদ, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষনেতাদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, শেখ হাসিনা আক্রোশের রাজনীতি করতেন। আক্রোশের বশবর্তী হয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের তিনি গুম, খুন করেছেন। বিভিন্নভাবে অচ্যাচার জুলুম নির্যাতনের পথ বেচে নিয়েছিলেন। একইসঙ্গে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে খুনি শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীরা। এখন সেইসব তথ্য বেরিয়ে আসছে। ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে শেখ হাসিনার নির্দেশে। ৫৭ সেনাকর্মকর্তা হত্যার দায়ে ৫৭ বার ফাঁসি হওয়া উচিত।
বিএনপির গুম হওয়া নেতাকর্মীদের ফিরিয়ে দেওয়া দাবি জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, দেশ এখন ক্লান্তিকাল অতিক্রম করছে। ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার বিদায় হয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন হয়েছে। সেই আন্দোলনে বিএনপির শীর্ষনেতাদের হারিয়েছি। অনেক নেতা গুম হয়েছে। সর্বশেষ ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে যারা গুম হয়েছে, তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনার আর দেশে ফেরত আসার সুযোগ নেই মন্তব্য করে আমান বলেন, হাজারো ত্যাগের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে। দেশ প্রতিনিয়ত গণতান্ত্রিক ধারায় ধাবিত হচ্ছে। গণহত্যার বিচার হচ্ছে। শেখ হাসিনার বিচার হবে। এই বাংলাদেশে খুনি শেখ হাসিনার ফিরিয়ে আসার সুযোগ নেই। তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি, চলছে। ঐক্যবন্ধ থেকেই আমাদের লক্ষে পৌঁছাতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ গড়তে হবে।
দলের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সহসভাপতি আবু আফসান ইয়াহিয়া।
সভায় খুলনা বিভাগের ছয় জেলার যশোর, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ার জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষনেতা ও সাবেক সংসদ সদস্যরা তাদের মতামত প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান যশোর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ড আর ব দ র হ ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
তীব্র খরার কবলে পড়েছে ইরানের রাজধানী তেহরান। সেখানে বাসিন্দাদের সুপেয় পানির প্রধান উৎসটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ গতকাল রোববার এ খবর জানিয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালক বেহজাদ পারসার বরাত দিয়ে আইআরএনএর খবরে বলা হয়, তেহরানে খাবার পানি সরবরাহের পাঁচটি উৎসের একটি আমির কবির বাঁধ। সেটিতে এখন মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ ঘনমিটার পানি আছে। এটি জলাধারটির মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৮ শতাংশ।
বেহজাদ পারসা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই পরিমাণ পানি দিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহ তেহরানের খাবার পানির চাহিদা মেটানো যাবে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরার মোকাবিলা করছে ইরান। গত মাসে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, তেহরান প্রদেশে এবার বৃষ্টির যে মাত্রা, তেমনটা গত এক শতাব্দীতে খুব একটা দেখা যায়নি।
এক কোটির বেশি মানুষের নগর তেহরান তুষারাচ্ছন্ন আলবোর্জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত। এই পর্বতমালার সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫ হাজার ৬০০ মিটার (১৮ হাজার ৩৭০ ফুট) পর্যন্ত। এই পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন নদীগুলো বহু জলাধারে পানির জোগান দেয়।
বেহজাদ পারসা বলেন, এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ করা বাকি জলাধারগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এই কর্মকর্তা।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।
এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।বেহজাদ পারসা, তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালকপানি সাশ্রয়ের পদক্ষেপ হিসেবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় বারবার সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর চলতি গ্রীষ্মে ঘন ঘন পানি সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘটনাও ঘটেছে।
জুলাই ও আগস্টে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য দুই দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ইরানে সে সময় তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিদিন একাধিকবার লোডশেডিং হয়েছে।
ওই দুই মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছুঁয়ে গিয়েছিল।
জুলাই ও আগস্ট মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ফারেনহাইট) ছুঁয়ে ছিল।ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আজ যেভাবে আলোচনা হয়েছে, পানিসংকট পরিস্থিতি তার চেয়েও গুরুতর।’
ইরানজুড়ে পানিসংকট একটি বড় সমস্যা, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণের শুষ্ক প্রদেশগুলোতে। ভূগর্ভস্থ সম্পদ ব্যবহারে অব্যবস্থাপনা ও সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারকে পানি ঘাটতির জন্য দায়ী করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুনপ্রচণ্ড গরমে পানির ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ইরানিদের কম পানি ব্যবহারের আহ্বান২০ জুলাই ২০২৫