চীনে হায়ারের গ্লোবাল কমেন্ডেশন সম্মেলন অনুষ্ঠিত
Published: 13th, March 2025 GMT
চীনের কিংদাওয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বর্ণাঢ্য ‘হায়ার সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন গ্লোবাল কমেন্ডেশন সম্মেলন’। এ বছর এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল-বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সেবা, সবাইকে উষ্ণ স্বাগতম।
প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে হায়ার তার দেশীয় ডিজিটাল পরিষেবা অভিজ্ঞতার বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণকে তুলে ধরে। পাশাপাশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশীয় সরঞ্জামের বিশ্বায়ন এবং একীভূত পরিষেবা মান সম্পর্কেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জানায় এই সম্মেলনের মাধ্যমে।
হায়ার বৈশ্বিক রিসোর্সকে সংযুক্ত করে এবং ‘তিনটি একীকরণ’ পদ্ধতি চালু করে। এর মধ্যে রয়েছে-একক সেবা মান, একক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা এবং একক মূল্যায়ন পদ্ধতি। যা নিশ্চিত করে, দেশ ও বিদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য একই উচ্চমানের হোম অ্যাপ্লায়েন্স সেবা।
হায়ার স্মার্ট হোমের বৈশ্বিক সেবা নেটওয়ার্ক এখন ২০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে বিস্তৃত, যেখানে ১৪ হাজারেরও বেশি সেবা কেন্দ্র এবং ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি প্রকৌশলী রয়েছে, যারা কার্যকর, স্বচ্ছ এবং পেশাদার সেবা প্রদান করছে।
এই সম্মেলন হায়ারের বৈশ্বিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স সেবায় আরো একটি সাফল্য নির্দেশ করে, প্রমাণ করে যে হায়ার উচ্চ-গুণমানের পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি অসাধারণ সেবার মাধ্যমে বৈশ্বিক ব্যবহারকারীদের বিশ্বাস অর্জন করে।
বিশ্বমানের সেবা অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দিতে সম্মেলনে হায়ার কয়েকটি পুরস্কার ঘোষণা করে। যার মধ্যে রয়েছে-সেবা অংশীদারদের জন্য “গ্লোবাল লিডিং ওয়ার্ড-অফ-মাউথ অ্যাওয়ার্ড” এবং প্রকৌশলীদের জন্য “গ্লোবাল টেকনিক্যাল এক্সেলেন্স স্টার অ্যাওয়ার্ড”।
হায়ার বাংলাদেশ সামিটে অংশ নেয়। এতে হায়ার বাংলাদেশ লিমিটেডের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম গ্রাহক সহায়তায় নিষ্ঠার জন্য এবং তার সিনসিয়ার ফরএভার বা আন্তরিক চিরকাল দর্শনের জন্য “গ্লোবাল টেকনিক্যাল এক্সেলেন্স স্টার” পুরস্কারে ভূষিত হন।
পুরষ্কার বিজয়ের অনুভূতি প্রকাশের জন্য সিরাজুল ইসলাম একটি স্পর্শকাতর গল্প তুলে ধরেন। যা সংকটকালে হায়ারের সর্বোচ্চ সেবাদানের প্রতিশ্রুতি ফুটিয়ে তুলে। গত বছরের জুলাই-আগষ্টের অস্থিতিশীল সময়ে যখন সামাজিক সংকট চলছিল, মোবাইল নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত হয়, দোকানপাট-পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়, তখনও হায়ার বাংলাদেশ দল গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। সিরাজুল ইসলাম ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। তার গল্প শ্রোতাদের গভীরভাবে স্পর্শ করে এবং বিশ্বব্যাপী প্রকৌশলীদের সিনসিয়ার ফরএভার বা আন্তরিক চিরকাল দর্শন রক্ষার জন্য অনুপ্রেরণা দেয়। এই অভিজ্ঞতা বিনিময় অন্যদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর মাধ্যমে হায়ার বাংলাদেশের সেবা কার্যক্রমের উন্নয়নে সহায়তা করে।
হায়ার সেবা স্থানীয়করণ এবং ডিজিটাল রূপান্তরকে এগিয়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশে হায়ার ‘থ্রি ট্রিপল’ সেবা কৌশল বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে-ব্যবহারকারীদের জন্য ‘ট্রিপল সন্তুষ্টি’ (গ্রাহক সন্তুষ্টি, বিক্রয় অংশীদার সন্তুষ্টি, সেবা অংশীদার সন্তুষ্টি); সেবা অংশীদারদের জন্য ‘ট্রিপল ফাস্ট’ (দ্রুত অ্যাপয়েন্টমেন্ট, দ্রুত সেবা, দ্রুত পেমেন্ট); প্রকৌশলীদের জন্য ‘ট্রিপল হাই’ (উচ্চ সক্ষমতা, উচ্চ দক্ষতা, উচ্চ আকর্ষণীয়তা)। কৌশলগুলো কেবল সেবা প্রদানকারীদের এবং প্রকৌশলীদের দক্ষতা বৃদ্ধিই করে না বরং ব্যবহারকারীদের দ্রুত এবং আরও পেশাদার সেবা অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
হায়ার বাংলাদেশ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে তার সেবা দলের পেশাদার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করেছে, যার মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় নিবেদিত সেবা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, গ্রাহক সেবা হটলাইন (১৬৬৭৮), টোল-ফ্রি নম্বর (০৮০০০-০১৬৬৭৮), ইঞ্জিনিয়ার মোবাইল অ্যাপ এবং উন্নত দক্ষতা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, বৈশ্বিকভাবে শীর্ষ জিসিসি ডিজিটাল সেবা প্ল্যাটফর্মের পরিচিতি হায়ার বাংলাদেশের সেবা সক্ষমতায় উন্নয়ন ঘটিয়েছে।
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে, হায়ার বাংলাদেশ তার ‘সিনসিয়ার ফরএভার’ দর্শনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশেষ করে হোম এপ্লায়েন্স শিল্পে নতুন মানদণ্ড নিশ্চিত করতে সেবার অভিজ্ঞতাগুলো প্রতিনিয়ত উন্নত করে চলেছে।
ঢাকা/হাসান/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?