কোনো স্বৈরশাসকই জনগণের কণ্ঠ রোধ করে জনরোষ থেকে রক্ষা পায়নি
Published: 13th, March 2025 GMT
মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার শিশুটির মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তারা এই ‘হত্যাকাণ্ডের’ দ্রুত বিচার চেয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবার্তায় জোটের নেতারা এই দাবি জানান। একই বার্তায় তাঁরা রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়কে ও স্থানে সমাবেশ ও মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, সরকার রাজধানী ঢাকার সচিবালয় থেকে মিন্টো রোড পর্যন্ত এবং প্রেসক্লাব, শাহবাগসহ বিভিন্ন স্থানে সভা–সমাবেশ ও মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বাংলাদেশের জন্মের পর থেকেই স্বৈরাচারী শাসকেরা তাদের গদি রক্ষার স্বার্থে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলন-সংগ্রামকে দমন ও বাধা দেওয়ার জন্য এরূপ অগণতান্ত্রিক আইন প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোনো স্বৈরশাসকই জনগণের কণ্ঠ রোধ করে জনরোষ থেকে রক্ষা পায়নি। পতিত শাসকের পথ অনুসরণ করে এ সরকারও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণ-আকাঙ্ক্ষার বিপরীত পথে হাঁটছে।’
জোটের নেতারা বলেন, সরকার নারী-শিশু ধর্ষক, চোর, ডাকাত, অর্থ পাচারকারী, বাজার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী ও মব (বিশৃঙ্খল জনতার) সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ ও বিচার করতে ব্যর্থ। উল্টো যারা এসব অনাচার, অত্যাচার, ধর্ষণ ও মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, তাদের মুখ বন্ধ করতেই সভা সমাবেশ মিছিল-মিটিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সম্প্রসারিত করা। সরকারের এই সিদ্ধান্ত বরং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সংকুচিত করবে। তাই অবিলম্বে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণকারী এই সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।
আরও পড়ুনসেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মাগুরায় শিশুটির মরদেহ, জানাজা সম্পন্ন২ ঘণ্টা আগেজোটের পক্ষে বিবৃতি দেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদ মার্কসবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
আরও পড়ুনসচিবালয়-শাহবাগসহ কয়েক এলাকায় সভা–সমাবেশ মিছিল নিষিদ্ধ১০ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক জনগণ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’
কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে