বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দেশ ও জাতীর জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তিনি বলেন, নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনৈতিক শাসনেরই ধারাবাহিকতা। তাই, এখন এই প্রথা ভেঙ্গে রাষ্ট্রকে একটি নৈতিক জায়গায় আনতে হবে। একটি বৈধ সংসদে ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য শাস্তির আইন পাশ করতে হবে। 

আজ বৃহস্পতিবার এক শোকবার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান। মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুর মৃত্যুতে তীব্র ক্ষোভ, প্রতিবাদ, গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে তিনি এ বার্তা দেন। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আট বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছে। দেশজুড়ে ভয়াবহভাবে বেড়েছে ধর্ষণ। তবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিতভাবে এমন ঘটনা ঘটছে, যা অনেকেই ভয়ে কিংবা মান সম্মানের কারণে প্রকাশ করেন না। বিভিন্ন বয়সী নারীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, বাদ পড়ছেনা একরত্তি শিশুও। প্রশাসনের কর্তৃত্ব না থাকায় ধর্ষণের ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে এবং এতে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

এ ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিক নির্যাতিত শিশুটির শারিরীক খোঁজখবর, চিকিৎসার ব্যবস্থা ও আইনি সহায়তার জন্য আইনজীবী নিয়োগ দেন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৮ সালে আওয়ামী সরকারের একতরফা নির্বাচনের সময় সুবর্ণচরে বিএনপি সমর্থিত এক গৃহবধূ ধানের শীষে ভোট দেওয়ার কারণে গভীর রাতে তার বাড়িতে ঢুকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তাকে তার সন্তানদের সম্মুখে প্রকাশ্যে ধর্ষণ করে। এখনকার ঘটনা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনৈতিক শাসনেরই ধারাবাহিকতা।

সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এসব অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। দেশে এখন যা চলছে তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সমাজের অস্থিরতার এই সময়ে শিকার হচ্ছে নারী ও শিশুরা। আমি নারী ও শিশুদের নিরাপত্তার জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপি মহাসচিব শোকবার্তায় শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোক বিহব্বল পরিবারবর্গ, নিকটজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ম র জ ফখর ল সরক র র ঘটন ব এনপ ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”

তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। 

এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ