কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিদায় নিচ্ছেন জাস্টিন ট্রুডো। আগামীকাল শুক্রবার দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান মার্ক কার্নি। গত বুধবার দেশটির গভর্নর জেনারেলের অফিস সূত্র জানায়, কার্নির সঙ্গে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরাও কাল শপথ নেবেন।
কানাডায় গত রোববার সদস্যদের ভোটে লিবারেল পার্টির নতুন নেতা বাছাই করা হয়। এতে মার্ক কার্নি ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। গত সোমবার অটোয়ায় ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেন, ক্ষমতা হস্তান্তর নির্বিঘ্ন ও দ্রুত হবে।
মার্ক কার্নি অর্থনীতিবিদ, কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছেন। পেশায় অর্থনীতিবিদ–ব্যাংকার কার্নি এমন একসময় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিচ্ছেন, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার শঙ্কা বাড়ছে।
৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত জানুয়ারিতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ট্রুডো। জনমত জরিপে দলের বাজে অবস্থা উঠে আসার পর দায়িত্ব ছাড়তে চাপে ছিলেন তিনি। তুলনামূলক কম বয়সে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাক লাগিয়ে দেন। গড়ে তোলেন লিঙ্গসমতাভিত্তিক মন্ত্রিসভা। নিজেকে পরিচিত করে তোলেন একজন নারীবাদী, পরিবেশবাদী এবং শরণার্থী ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকারকর্মী হিসেবে। তবে জনপ্রিয়তা ক্রমেই কমছিল তাঁর। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ট্রুডোর ক্ষমতা আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। পদত্যাগের জন্য বিরোধীদের পাশাপাশি নিজ দলের মধ্য থেকে চাপ বাড়তে শুরু করে ট্রুডোর ওপর।
একই সঙ্গে কার্নির ভাবমূর্তি বাড়তে থাকে। দলীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে কার্নি বলেন, এখন কানাডার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার আত্মবিশ্বাস দেখান। তিনি বলেন, ‘আমেরিকানদের কোনো ভুল করা উচিত নয়, হকির মতো বাণিজ্যেও কানাডা জিতবে।’ গত বুধবার কার্নি বলেন,অর্থনৈতিক টানাপোড়েন এড়াতে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।