ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ, বাবা-চাচাকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ
Published: 14th, March 2025 GMT
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় এক শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা ও তার চাচাকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলার পর অ্যাসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, অপহরণসহ বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দেওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আসামিরা হলেন- উপজেলার ২ নম্বর পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের ঝোড়খালী এলাকার মাহাবুব মল্লিকের ছেলে রাজ মল্লিক (১৯), সালাম মল্লিকের ছেলে সিফাত মল্লিক (২২) এবং মোস্তফা মল্লিকের ছেলে আরিফ মল্লিক (২১)।
বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, ওই স্কুলছাত্রী এ বছর আমুয়া বন্দর আমির মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিবে। তাকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে রাজ মল্লিক নামের এক যুবক আটকিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এ বিষয়টি মেয়েটি বাড়িতে এসে তার পরিবারকে জানায়। পরিবারের লোকজন ওই যুবককে এমন কর্মকাণ্ড করতে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীকে অপহরণ করার হুমকি দিতে থাকে রাজ মল্লিক।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত সোমবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে মেয়েটি প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। আমুয়া ঝোড়খালী সড়কের নুতন বাজার জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় আসামিরা তার মেয়ের পথ রোধ করেন। এ সময় শ্লীলতাহানির একপর্যায়ে মেয়েটির গায়ের ওড়না ছিড়ে ফেলে। সেখান থেকে মেয়েটি দৌড়ে বাড়ি এসে ঘটনা তাকে (বাদী) জানালে তিনি ঘটনাস্থলে এসে আসামিদের শাসান। এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে বাদীকে বেধড়ক মারধর করে। এ সময় ওই ছাত্রী বাবাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করা হয়।
তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মং চেনলা বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল, ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা
ইসরায়েলের জেরুজালেম শহরের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ দাবানল। শুষ্ক আবহাওয়ায় তীব্র বাতাসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা। এমন পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। খবর সিএনএন, টাইমস অব ইসরায়েল, বিবিসি, আল জাজিরার
দাবানল নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে ইসরায়েল। দাবানলে এ পর্যন্ত অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। তবে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
দাবানলকবলিত কয়েকটি এলাকার মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ বলেছেন, এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি।’
জেরুজালেমের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের কমান্ডার শমুলিক ফ্রিডম্যান বলেন, ইসরায়েলের ইতিহাসে এটি সম্ভবত সবচেয়ে বড় দাবানল। সতর্ক করে তিনি বলেন, কিছু সময়ের মধ্যে ঘণ্টায় ৬০ মাইলের বেশি গতিতে বাতাস বইতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে।
এই দাবানলের কারণে বুধবার ইসরায়েলের মেমোরিয়া ডেতে তেল আবিব ও জেরুজালেমের মধ্যে সংযোগকারী প্রধান সড়ক ‘রুট-১’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ঘন ধোঁয়ার মধ্যে মানুষ সড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।
কয়েক ঘণ্টা পরে জরুরি সেবাকর্মীরা মহাসড়কে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা সারি সারি গাড়ি তল্লাশি করে দেখছিলেন, ওই সব গাড়ির মধ্যে কেউ আটকে আছেন কি না।
অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের কমান্ডার শমুলিক ফ্রিডম্যান বলেন, আমরা এখনো জানি না, কী কারণে আগুন লেগেছে। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো সূত্রও খুঁজে পাইনি। এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
ইসরায়েলি পুলিশ বলেছে, তারা সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই ব্যক্তি একটি খোলা মাঠে আগুন লাগানোর চেষ্টা করছিলেন বলে পুলিশের দাবি।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি পুলিশ দাবি করেছে, জেরুজালেমের পুলিশ কর্মকর্তারা পূর্ব জেরুজালেমের একজন বাসিন্দাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছে। ওই ব্যক্তি তখন শহরের দক্ষিণ প্রান্তের একটি খোলা মাঠে আগুন লাগানোর চেষ্টা করছিলেন। তার কাছ থেকে একটি লাইটার, তুলা ও অন্যান্য দাহ্য পদার্থ উদ্ধার করা হয়েছে।
ইসরায়েলি পুলিশের দাবি, ৫০ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি পূর্ব জেরুজালেমের উম তুবা এলাকার বাসিন্দা। উম তুবা এলাকায় আরব ফিলিস্তিনিরা বসবাস করে থাকে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদন সার দাবানল মোকাবিলায় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, এমন ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলছেন। তিনি তাদের কাছ থেকে উড়োজাহাজের সহায়তা চেয়েছেন। ইতালি ও মেসিডোনিয়া থেকে তিনটি উড়োজাহাজ শিগগিরই ইসরায়েলে পৌঁছাবে বলে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দাবানল ছড়িয়ে পড়া এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ বলেন, ‘আমরা জাতীয় জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি। জীবন বাঁচাতে এবং দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে সব বাহিনীকে সক্রিয় করতে হবে।’
ইসরায়েলের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস জানিয়েছে, প্রায় ১২০টি দল এবং ১২টি অগ্নিনির্বাপণ বিমান ও হেলিকপ্টার দাবানল মোকাবিলায় কাজ করছে।
শামির মেডিকেল সেন্টার ও কপলান মেডিকেল সেন্টারের তথ্যমতে, দাবানলের কারণে অন্তত ডজন খানেক মানুষকে এই দুটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে জেরুজালেমের উপকণ্ঠে অবস্থিত হাদাসা মেডিকেল সেন্টারের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে, ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া’ কেউ যেন হাসপাতালে না আসেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও যাদের অবস্থা গুরুতর নয়, তাদের হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে দাবানলে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
গত সপ্তাহে যে এলাকায় দাবানল দেখা দিয়েছিল, এবারও দাবানল প্রায় একই জায়গায় ছড়িয়েছে।