সুখী দাম্পত্যের জন্যে মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার কখনো কখনো সম্পর্ক খারাপের কারণ হতে পারে। ফোন কখন সাইলেন্ট রাখা ঠিক নয়, ফোনে সঙ্গীর সঙ্গে কীভাবে কথা বলবেন এ বিষয়ে গুরুত্বপূণ দিক নির্দেশনা দিয়েছেন  জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এফসিপিএস পার্ট ২ ট্রেইনি মনোবিদ ডা. মুনিরা হোসেন মনি। রাইজিংবিডির পাঠকদের উদ্দেশ্যে এই মনোবিদের পরামর্শ—

১) আপনার সঙ্গীর সঙ্গে থাকাকালীন ফোন সাইলেন্ট বা বন্ধ রাখার অভ্যাস করবেন না। এটি আপনার গোপন কিছু লুকানোর ইঙ্গিত দিতে পারে।

২) আপনার সঙ্গীর নম্বরটি ভালোবাসার বিশেষ নামে সংরক্ষণ করুন,  শুধু অফিসিয়াল নামে সংরক্ষণ করলে তা অন্য সাধারণ নম্বরের মতো মনে হতে পারে।

৩) সঙ্গীর ফোন কলের উত্তর দিন স্নেহপূর্ণ শব্দ দিয়ে শুরু করুন। কারণ যেভাবে কথোপকথন শুরু হয়, সেটাই তার গতিপথ নির্ধারণ করে।

৪) কথা শেষ করুন ইতিবাচকভাবে। ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ বলুন, কোনো মজার কথা বলুন, প্রশংসা করুন, উষ্ণ শব্দ ব্যবহার করুন এবং হাসিমুখে কল শেষ করুন।

৫) অনলাইনে বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট করা স্বাভাবিক, তবে কখনোই আপনার সঙ্গীর চেয়ে অন্য কারও সঙ্গে বেশি চ্যাট করবেন না।

৬) ব্যস্ত থাকলে সঙ্গীকে আগেই জানান যে, আপনি কল ধরতে বা মেসেজের উত্তর দিতে পারবেন না। কী করছেন এবং কতক্ষণ ব্যস্ত থাকবেন, সে সম্পর্কে ধারণা দিন যাতে আপনার সঙ্গী অবহেলিত অনুভব না করেন।

৭) ফোনে ফ্লার্ট করুন, তবে শুধুমাত্র আপনার সঙ্গীর সঙ্গে। যদি কেউ আপনাকে ফোনে ফ্লার্ট করার চেষ্টা করে, স্পষ্ট জানিয়ে দিন যে আপনি সম্পর্কের মধ্যে আছেন।

৮) সঙ্গীর সঙ্গে অনেক ছবি ও ভিডিও তুলুন। ভবিষ্যতে ফিরে তাকালে এই মুহূর্তগুলো আপনাকে আনন্দ দেবে।

৯) যখন একসঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, ফোন কম ব্যবহার করুন যাতে সম্পর্কের প্রতি মনোযোগ দেওয়া যায়।

১০) ফোন ধরতে বারবার সঙ্গীর কাছ থেকে দূরে সরে যাবেন না। এতে সন্দেহ তৈরি হতে পারে। ভালোবাসা হলো বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা সম্পর্ক।

১১) যদি জরুরি না হয়, তাহলে সঙ্গীকে একাধিকবার কল বা মেসেজ করে বিরক্ত করবেন না। এটি আপনার সঙ্গীকে অতিরিক্ত চাপে ফেলে দিতে পারে।

১২) সঙ্গীর মিসড কল বা মেসেজ দেখলেই দ্রুত উত্তর দিন, যাতে তিনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।

১৩) আপনার ফোন লক থাকলে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য সঙ্গীর নম্বরটি ইমার্জেন্সি হিসেবে সংরক্ষণ করুন।

১৪) ফোনে তর্ক বা ঝগড়া করবেন না। এতে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয় এবং সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মুখোমুখি বসে সমাধান করুন।

১৫) সঙ্গীর ওপর রাগ করলে বা কষ্ট পেলে তার কল এড়িয়ে যাবেন না। বরং বলুন, ‘এখন কথা বলতে পারছি না’, এতে সঙ্গী বুঝতে পারবেন।

১৬) যদি কোনো কারণে ফোন বন্ধ করতে হয়, তবে সঙ্গীকে আগে থেকে জানান, যাতে তিনি উদ্বিগ্ন না হন।

১৭) সম্পর্ক উদযাপনের জন্য অনলাইনে ছবি পোস্ট করা ভালো, তবে বেশি ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। কিছু বিষয় ব্যক্তিগত রাখাই ভালো।

১৮) সঙ্গীর সঙ্গে কোনো সমস্যা হলে, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করবেন না।

১৯) আপনার সম্পর্কে নতুন কিছু জানার জন্য সঙ্গীকে সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্যদের কাছ থেকে শোনার সুযোগ দেবেন না। আগে সঙ্গীকে জানান, তারপর চাইলে অনলাইনে শেয়ার করুন।

২০) যদি কল রিসিভ না করতে পারেন এবং পরে সঙ্গী জানতে চান, তবে ব্যাখ্যা দিন। কার সঙ্গে কথা বলছিলেন জানান, এতে স্বচ্ছতা ও বিশ্বাস বাড়ে।

২১) সম্পর্কের ক্ষেত্রে যোগাযোগ দুই পক্ষেরই দায়িত্ব। কেউ যেন মনে না করে যে শুধু সে-ই চেষ্টা করছে।

২২) যখন সঙ্গী আপনার পূর্ণ মনোযোগ চান, বিশেষত ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে, তখন ফোন দূরে রাখুন। ফোনের চেয়ে সঙ্গীকে বেশি সময় দিন।

স্মরণ রাখুন: ফোনের ব্যবহার সম্পর্ককে ইতিবাচক বা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তাই বুদ্ধিমানের মতো স্মার্টফোন ব্যবহার করুন। সম্পর্ককে সুখী ও সুস্থ রাখতে এগুলো অনুসরণ করুন!

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র করব ন ন র কর ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ

বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল

ইউনূস-তারেক বৈঠক
রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে: যৌথ বিবৃতি

বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। 

কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ‍“বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।”

বৈঠকে লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সব রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।”

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ