‘বাধ ভেঙ্গে দাও...’ স্লোগানে সারাদেশের দেড় শতাধিক নারী উদ্যোক্তার অংশগ্রহণে রাজধানীর ঢাকা রিজেন্সি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল সাহসিকা-নারী উদ্যোক্তা সমাবেশ ও সম্মাননা। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আটজন আত্মপ্রত্যয়ী নারী উদ্যোক্তার হাতে সাহসিকা সম্মাননা তুলে দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মাননীয় ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার।

এবছর প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন ক্যাটাগরিতে ড.

আফরোজা পারভীন (নারী উন্নয়ন শক্তি), প্রযুক্তি ও উন্নয়ন ক্যাটাগরিতে নিশাদ নার্গিস (নকিব টেকনোলজি), ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ক্যাটাগরিতে অভিনেত্রী রিচি সোলাইমান (ইটারনাল বিউটি লাউঞ্জ), টেকসই পণ্য ক্যাটাগরিতে মাকসুদা খাতুন (শাবাব লেদার), শিশুশিক্ষা ক্যাটাগরিতে ঈশিতা জাহাঙ্গীর (কারুপীঠ পাপেট), গৃহপণ্য ক্যটাগরিতে জেবিন সুলতানা (জারা ফ্যাশন), ঐতিহ্যপণ্য ক্যাটাগরিতে নিগার সুলতানা (আরুবাস কালার বুটিস) এবং পর্যটন ও বিনোদন ক্যাটাগরিতে ফাতিমা সুলতানা উর্মি (ফ্যান্টাস্টিক ওয়ার্ল্ড, খুলনা) সাহসিকা-নারী উদ্যোক্তা সম্মাননা লাভ করেন। সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মাননীয় ডেপুটি গভর্নর জনাব নূরুন নাহার প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদেও হাতে সাহসিকা নারী উদ্যোক্তা সম্মাননা তুলে দেন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জনাব মো. আমজাদ হোসেন খান ও ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার বাংলাদেশ এর মহাসচিব মিস লাইলা বিলকিস আরা। এছাড়া যমুনা ব্যাংক পিএলসি হেড অব এসএমই এনএইচএন নুসরাত, বিকাশ লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অনিরুদ্ধ সেন গুপ্ত, দ্য সিটি ব্যাংক পিএলসি সিনিয়র এসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ওমেন ব্যাংকিং ব্রাঞ্চ হেড ফারহানা আক্তার পুরস্কার বিতরণ পর্বে উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন লেখক, গবেষক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্মপরিচালক নাজমুল হুদা। করোনার ক্রান্তিকালে অনলাইন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে বিগত কয়েক বছরে সাহসিকা একটি অনবদ্য উদ্যোগে পরিণত হয়েছে সাহসিকা এবং সাহসিকা-নারী উদ্যোক্তা সম্মাননা একটি উল্লেখযোগ্য স্বীকৃতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন অতিথিরা। এর আগে ফান্ডিং অ্যান্ড ফিটনেস ফর ফিমেল শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। শিমুল মজলিশের সঞ্চালনায় এতে আলোচক হিসেবে অংশ নেন যমুনা ব্যাংকের এসএমই বিভাগের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার রমাকান্ত দাস, পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান এবং অভিনেত্রী এবং নারী উন্নয়ন শক্তি এর নির্বাহী পরিচালক ড. আফরোজা পারভীন। এসময় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়ন সুবিধা, মনোবল বৃদ্ধি ও সাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি বক্তারা উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য 'নেটওয়ার্কিং অ্যান্ড এআই অ্যাপ্লিকেশন ইন বিজনেস' বিষয়ে একটি কর্মশালা পরিচালনা করেন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট ফারিদুজ্জামান স্বাধীন। স্বপ্নশীলন ক্যারিয়ার কেয়ারের উদ্যোগে তৃতীয়বারের মতো এ আয়োজনে সহযোগী ছিল দ্য সিটি ব্যাংক, বিকাশ, লংকা বাংলা ফাইন্যান্স, যমুনা ও মেমোরিস।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
  • ১৩ ঘণ্টা পর রংপুরের রেল যোগাযোগ সচল
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
  • হেরোইন বিক্রির অভিযোগে ধামরাইয়ে গ্রেপ্তার ৩
  • টেকনাফে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ২