ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় বুধই শেখ নামে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধকে প্রধান আসামি করে চার জনের নামে মামলা হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানার ওসি মো. মাহমুদুল হাসান। এর আগে বুধবার (১২ মার্চ) দিবাগত রাতে শিশুটির বাবা বাদি হয়ে বোয়ালমারী থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের একটি গ্রামে গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী বাড়ির পশ্চিম পাশে মাঠে খেলতে যায়। সেখান থেকে একই ইউনিয়নের মুজুরদিয়া গ্রামের বুধই শেখ (৬১) শিশুটিকে সুকৌশলে ঘাসের জমিতে নিয়ে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। এসময় শিশুর ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে বুধই শেখ পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিয়ে ওইদিন রাতে শিশুটির বাবাসহ অভিভাবকরা বুধইয়ের কাছে শুনতে গেলে তাদেরকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে শিশুটির বাবা বাদি হয়ে বুধবার দিবাগত রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯ (৪) (খ) তৎসহ ৩২৩/৫০৬ (২) পেনাল কোড ১৮৬০ ধারায় বোয়ালমারী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর- ১১।

মামলায় বুধই শেখকে প্রধান আসামি করে চার জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলো- বুধই শেখের ভাই ছলেমান শেখ (৫৫), একই গ্রামের হবি শেখ (৫০) এবং বদিয়ার শেখ (৪৮)।

এর আগেও বুধই শেখের বিরুদ্ধে এ ধরনের কাজে জড়িত থাকার এলাকায় বদনাম রয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। বুধই শেখ একজন খারাপ প্রকৃতির লোক বলে এলাকায় বদনাম রয়েছে। মামলার পর থেকে বুধই শেখ পলাতক রয়েছে।

বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো.

মাহমুদুল হাসান বলেন, “ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।”

ঢাকা/তামিম/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনা কমিয়েছে ভারতের পরিশোধনাগারগুলো, ছাড় কমে যাওয়ার প্রভাব

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগারগুলো গত সপ্তাহে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করেছে বলে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে। গত মাসে ছাড়ের পরিমাণ কমে আসার কারণে মূলত তাদের তেল কেনা কমেছে। এ খবরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

সেই সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করার সময় বলেছেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনে ভারত রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ব্যয় মেটাতে সহযোগিতা করছে। ফলে তাদের এ ২৫ শতাংশ শুল্ক দেওয়ার পাশাপাশি অনির্দিষ্ট হারে দণ্ড দিতে হবে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক ভারত সমুদ্রপথে রপ্তানি হওয়া রুশ অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত শোধনাগারগুলো, যেমন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, ভারত পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ও মাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রুশ অপরিশোধিত তেলের কোনো দরপত্র দেয়নি বলে সংশ্লিষ্ট চারটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে। এ বিষয়ে ফেডারেল তেল মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে রয়টার্স যোগাযোগ করলেও তারা মন্তব্য করেনি।

সূত্রগুলো জানায়, এই চার শোধনাগার নিয়মিতভাবে সরবরাহ চুক্তির ভিত্তিতে রুশ তেল কিনত; কিন্তু এখন তারা বিকল্প জোগানের জন্য স্পট মার্কেটে ঝুঁকেছে—প্রধানত মধ্যপ্রাচ্যের আবুধাবির মুরবান ক্রুড ও পশ্চিম আফ্রিকার তেল। বেসরকারি শোধনাগার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও নায়ারা এনার্জি ভারতে রুশ তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত শোধনাগারগুলো দেশটির মোট দৈনিক ৫ দশমিক ২ মিলিয়ন বা ৫২ লাখ ব্যারেল শোধনক্ষমতার ৬০ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে।

গত ১৪ জুলাই ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে বড় ধরনের শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানো না গেলে যেসব দেশ রুশ তেল কিনছে, সেই দেশগুলোর ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড দাবি করেছেন, তিনি ‘শুনেছেন’ ভারত রুশ তেল আমদানি বন্ধ করেছে। শুধু তা–ই নয়, এটিকে তিনি ভালো পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসা করেছেন। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানিয়েছে, দেশের জ্বালানি কেনাবেচা বাজারের গতি–প্রকৃতি ও জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। ভারতীয় তেল কোম্পানিগুলো রাশিয়ান তেল আমদানি বন্ধ করেছে—এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।

সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমার জানা মতে, ভারত আর রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না, এটা ভালো পদক্ষেপ। দেখা যাক, কী হয়।’

রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে ট্রাম্পের আক্রমণের জবাবে গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পাররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘জ্বালানির কেনার উৎস নির্ধারণের বিষয়ে আমাদের বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে সবাই সচেতন। বাজারের সহজলভ্যতা অনুযায়ী আমরা তেল কেনার চেষ্টা করি। এ বিষয়ে আমাদের ধারাবাধা উৎস নেই।’

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টিও ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়। পরিষ্কার জানানো হয়, রাশিয়া ভারতের অংশীদার ‘পরীক্ষিত’। এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির নিজস্ব ভিত্তি আছে। তৃতীয় দেশের লেন্স দিয়ে তা দেখা উচিত নয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ