চোখে রাসায়নিক দ্রব্য লাগিয়ে কলেজছাত্রীকে শ্লীলতাহানি, গ্রেপ্তার ২
Published: 14th, March 2025 GMT
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ১৫তম ব্যাচের ছাত্রীকে (২০) সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চোখে রাসায়নিক দ্রব্য লাগিয়ে হেনস্তা ও শ্লীলতাহানি করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২ তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
এ সময় আসামিদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেরল জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলার নাজিরপুর এলাকার মো.
শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলের দিকে র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মিঠুন কুমার কুণ্ডু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে আছিয়ার গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল
নারায়ণগঞ্জে পৃথক স্থানে দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, আটক ২
এর আগে, একই দিন দুপুরের দিকে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার নাজিরপুর এলাকার নূর হোসেনের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১২ মার্চ নোয়াখালী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ইফতার মাহফিল শেষে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে একটি যাত্রীবাহী সিএনজিতে ওঠে কলেজের ১৫তম ব্যাচের ওই ছাত্রী। কিছু পথ যাওয়ার পর সিএনজির ভেতরে থাকা ৫ জন পুরুষের মধ্যে একজন তার মুখ চেপে ধরে বাকি ৪ জন ভিকটিমের কোলে বসে পড়ে। কিছুক্ষণ পর আরো ১ জন সিএনজিতে ওঠলে সবাই মিলে ছাত্রীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও শ্লীলতাহানি করে তার চোখে রাসায়নিক দ্রব্য লাগিয়ে দেয়। এ সময় তারা ছাত্রীর ব্যাগ থেকে টাকা, একটি এটিএম কার্ড ও একটি মোবাইল নিয়ে যায়। মোবাইলের পাসওয়ার্ড ও বিকাশের পাসওয়ার্ড দিতে বাধ্য করে ছাত্রীকে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ভিকটিমকে সিএনজি করে কলেজ গেট থেকে একলাশপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় আধা ঘণ্টা ইউটার্ন নিয়ে একাধিবার ঘুরাতে থাকে এবং অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য নির্জন স্থান খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে তারা ভিকটিমকে একলাশপুর বাজারের উত্তর পার্শ্বে সিএনজি থেকে নামিয়ে নির্জন স্থানে নেওয়ার চেষ্টা করলে ভিকটিম শোর চিৎকার দেয়। পরে লোকজন এগিয়ে আসতে দেখে ভিকটিমকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার মিঠুন কুমার কুণ্ডু আরো জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার সূত্র ধরে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালী/সুজন/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মো. শাকিল (৩১) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই শুভকেও (২৮) গুলি করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে এবং পেশায় একজন থাই গ্লাস মিস্ত্রি ছিলেন। ঈদুল আযহার আগে শাকিলের সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানীর গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে নয়জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে লাবিব নামে এক যুবককে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরো কয়েকজন তাদের বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। পিস্তলের গুলি শাকিলের বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় তার ছোটভাই শুভ বড়ভাই শাকিলকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীর দল কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তিন জনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখে। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের ছোট ভাই শুভ জানান, আটকসন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় গঙ্গাবর গ্রামের যুবক লাবিবের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে বেগমগঞ্জ উপজেলার আগলাইয়ার পুর ইউনিয়নের নয়জন সন্ত্রাসী সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে এসে লাবিবকে গঙ্গাবর বাজারে এসে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিতে চেষ্টা করে। এসময় বাজারের লোকজনের সাথে শাকিল ও লাবিবকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা শাকিলকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তিনি তার ভাইকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে অপহরণকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তার ভাই ও শাকিলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত শাকিল বিবাহিত ছিলেন। তার ৮মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার বই সূত্রে জানা যায় রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটের দিকে শাকিলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার বুকে ও মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনাস্থলে অবস্থানরতম বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্খানীয় এলাকাবাসী অস্ত্রধারী তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রেখেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছি।