বাংলাদেশ ও তুরস্কের নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদন শুরু করা চলতি বছরের অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছে রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পরমাণু সংস্থা রসাটম। এ ছাড়া দেশটির পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র লেনিনগ্রাদ টু-এর চতুর্থ ইউনিটের জন্য প্রথম কংক্রিট ঢালা এবং কুরস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম নতুন ইউনিটকে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে আনার কাজগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সংস্থাটি।

রাশিয়ার সারোভ শহরে ‘রসাটম ইনফরমেশন ডে’ উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যে রসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সেই লিখাচেভ এসব তথ্য জানান। বৃহস্পতিবার সংস্থাটির নিজস্ব ম্যাগাজিন স্ত্রেনা রসাটমের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার নিউজ এ খবর জানিয়েছে। 

বক্তব্যে অ্যালেক্সেই লিখাচেভ বলেন, পরমাণু জ্বালানি খাতে ২০৪২ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্প্রসারণের জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নই প্রধান লক্ষ্য। আমাদের ৩৮টি ইউনিট তৈরি করতে হবে, যার মধ্যে কিছু হবে আমাদের জন্য নতুন অঞ্চলে– সাইবেরিয়া ও দূরপ্রাচ্য। সেই সঙ্গে সেভেরস্কে চতুর্থ প্রজন্মের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

রসাটম মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা ব্রিকস প্লাস এবং সিআইএস (কমনওয়েলথ অব ইনডিপেনডেন্ট স্টেটস) দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে যাব, নতুন জোট ও অংশীদারিত্ব গড়ে তুলব। আমাদের মূল লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে– তুরস্ক ও বাংলাদেশের প্রকল্পগুলোতে প্রথম কিলোওয়াট-ঘণ্টা উৎপাদন।’ 
বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি ইউনিটে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ চলছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর ও দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সালের অক্টোবরে চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে প্রকল্পটি নির্দিষ্ট সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাঠামোগত, প্রযুক্তিগত ও যন্ত্রপাতির প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করেছেন।

বক্তৃতায় অর্থনৈতিক লক্ষ্য ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে লিখাচেভ বলেন, ‘যে কোনো প্রকল্পের বিনিয়োগের রিটার্ন মূলধনের ব্যয়ের চেয়ে বেশি হতে হবে– শুধু ঋণের জন্য নয়, আমাদের নিজস্ব মূলধনের জন্যও। অর্থের উচ্চ ব্যয়ের কারণে, আমরা অলাভজনক প্রকল্প পরিচালনা করতে পারি না। অন্যথায়, আমাদের সব আয় ব্যাংকগুলোর কাছে চলে যাবে।’


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প আম দ র র জন য ইউন ট প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ