রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনায় শিশু মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মো. ইয়াসিন নামে এক এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি শিশুটির মাদ্রাসার শিক্ষক। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযুক্তকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের দক্ষিণখান অঞ্চলের সহকারী কমিশনার নাসিম এ গুলশান সমকালকে বলেন, আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি কয়েকদিন ধরে শিশুটিকে বলাৎকার করছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার শিশুটি নিপীড়নের শিকার হয়। পরে সে বাসায় গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের এ বিষয়ে জানায়। তাদের মাধ্যমে আশপাশের লোকজনও বিষয়টি জানতে পারেন। একপর্যায়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইফতারের পর ইয়াসিনকে ধরে পিটুনি দেয় জনতা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে দক্ষিণখান থানায় নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী এবং তার পরিবারের অভিযোগ, অন্তত তিনবার শিশুটিকে বলাৎকার করেন ওই শিক্ষক। এ খবর জানার পর শত–শত মানুষ মাদ্রাসার সামনে গিয়ে ভিড় জমান। তারা ইয়াসিনকে মারধর করেন।

ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষকের সামনে উপস্থিত হয়ে সবার সামনেই ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছে শিশুটি। তখন ইয়াসিনকে আরও মারধর করে উত্তেজিত জনতা। আর অভিযুক্ত শিক্ষক সবার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আটক

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ