গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের লাখিরপাড়া গ্রামের আলোচিত ডাকাতিকালে প্রতিবন্ধী যুবক পিয়াস মজুমদার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ।

মূলত ঋণের টাকা শোধ ও ব্যবসার মূলধন যোগাড় করতে ডাকাতির পথ বেছে নেয় তারা। আর ডাকাতি করতে গিয়েই প্রতিবন্ধী যুবককে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত তিন জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার এ তথ্য জানিয়েছেন।

শনিবার (১৫ মার্চ) বিকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের হল রুমে প্রেস ব্রিফিং করে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো.

মিজানুর রহমান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- উপজেলার চোরখুলী গ্রামের আতাউর শেখের ছেলে সামিউল শেখ (৩৫), একই উপজেলার আশুতিয়া গ্রামের সোহরাফ খানের ছেলে মো. মোরশেদ ওরফে কামাল (৪০) ও চোরখুলি গ্রামের রহম ভুইয়ার ছেলে শওকত ভুইয়া (৫০)। 

এদেরকে কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ জেলা শহর ও বাগেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় এদের কাছ থেকে পুলিশ লুণ্ঠিত ২৪ হাজার ১০০টাকা উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার জানান, হত্যা ও ডাকাতির ঘটনার দিন ১১ মার্চ নিহত পিয়াসের বাবা পল মজুমদার খোকন বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। পরদিন ১২ মার্চ উপজেলার চোরখুলী গ্রাম থেকে সামিউল শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে বাগেরহাট জেলায় অভিযান চালিয়ে মো. মোরশেদ ওরফে কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গতকাল শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে গোপালগঞ্জ শহর থেকে শওকত ভুইয়াকে (৫০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে এদের কাছ থেকে ২৪ হাজার ১০০টাকা উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, “এর আগে প্রথমে ৮ ও ১০ মার্চ ডাকাতির চেষ্টা চালালেও তারা ব্যর্থ হয়। পরে ১১ মার্চ তারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ডাকাতি শেষে তারা লুণ্ঠিত টাকা ও মালামাল ভাগাভাগি করে নেয় এবং সেই টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করে। শওকত ভুইয়ার নামে ১১টি মামলা রয়েছে।”

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) কোটালীপাড়া উপজেলার লাখিরপাড় গ্রামের পল মজুমদার খোকন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে দিনে দুপুরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসময় ডাকাতরা তার ছেলে পিয়াস মজুমদারকে হাত পা বেঁধে হত্যা করে টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। হত্যা ও ডাকাতির ঘটনায় ওই দিনই পল মজুমদার খোকন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে কোটালীপাড়া থানায় একটি হত্যা ও ডাকাতি মামলা দায়ের করেন।

ঢাকা/বাদল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর গ প লগঞ জ উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের বিমা দাবি নিষ্পত্তির অনুরোধ বিটিএমএর
  • ১৩ ঘণ্টা পর রংপুরের রেল যোগাযোগ সচল
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
  • হেরোইন বিক্রির অভিযোগে ধামরাইয়ে গ্রেপ্তার ৩