মশার কয়েল থেকে ঘরে আগুন, দগ্ধ হয়ে কিশোরীর মৃত্যু
Published: 16th, March 2025 GMT
কক্সবাজারের মহেশখালীতে ঘরের ভেতরে আগুনে পুড়ে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাতঘরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোরীর নাম মুন্নি আক্তার। সে ওই এলাকার খোরশেদ আলমের মেয়ে। স্থানীয় শাপলাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল মুন্নি।
নিহত মুন্নির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে শোবার ঘরের খাটের নিচে কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে ছিল ওই কিশোরী। এ অবস্থায় তার মা তাকে ঘরে রেখে দরজায় তালা দিয়ে পানের বরজে কাজ করতে যান। মুন্নির ভাইবোনেরাও মায়ের সঙ্গে ছিল। সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ ঘরটিতে আগুন লাগে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা পানি ছুড়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এর একপর্যায়ে দরজার তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে আগুনে দগ্ধ কিশোরী মুন্নির লাশ উদ্ধার করা হয়।
জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কাইছার হামিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহত কিশোরীর লাশ পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পরিবারের অসচেতনতার কারণে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়া দরকার।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি