পুলিশের উদ্ধার করা গাজা বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে ওসি মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানির পর প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে কামরুজ্জামানকে ঢাকা রেঞ্জ অফিসে সংযুক্তি’র কথা বলা হয়েছে। বিষয়টির  সত্যতা নিশ্চিত করে নরসিংদী পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে। 

এ দিকে অভিযোগ অস্বীকার করে কামরুজ্জামান বলেছেন, ‘‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। তাছাড়া আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধ্বংস করলো?’’

জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর আটাশিয়া এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৬ কেজি গাজা উদ্ধার করেন তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার। তিনি বিষয়টি কামরুজ্জামানকে অবহিত করে উদ্ধারকৃত গাজা ডিবি অফিসে নিয়ে আসেন। এরপর বিচারিক প্রক্রিয়ায় আদালতে উপস্থাপন করা হলে, আদালত জব্দকৃত গাজা ধ্বংস বা পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে,  কামরুজ্জামান জব্দকৃত গাজা মাধবদী আলগী এলাকার এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন। প্রতি কেজি গাজার বাজার মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলেও তিনি ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের নিকট মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য। তবে আদালতের নথিতে জব্দকৃত ৯৬ কেজি গাজা ধ্বংস করা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। 

এ দিকে মালখানার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর শামীম এক প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ সুপার কার্যালয়ে। প্রতিবেদনে তিনি জানান, গত ১১ মার্চ তিনি কোনো মাদকদ্রব্য ধ্বংস করতে দেখেননি। কামরুজ্জামান বারবার তাকে ডিবি অফিসে ডেকে এনে টাকা নেওয়ার চাপ দিয়েছেন।  টাকা নিতে না চাইলে তিনি হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

কাগজে-কলমে সব ঠিক থাকলেও এখানে বিশাল অনিয়ম হয়েছে উল্লেখ করে শামীম বলেন, ‘‘গত দুই মাসে আদালত প্রাঙ্গনে কোনো মাদকদ্রব্য পোড়াতে দেখিনি।’’

এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে  কামরুজ্জামান বলেন, ‘‘আমাদের অফিসার আলামত জব্দ করেছে। তা ধ্বংস তালিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছে। কোর্ট রিসিভ করেছে। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোর্ট ধ্বংস করেছে না করে নাই, সেটা তো কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কোনো জবাব নেই। তাছাড়া এই আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের।’’ 

গাজা বিক্রির বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কি ষড়যন্ত্রের শিকার আপনারা যাচাই করে দেখেন। আমি বিক্রি করলে কোর্ট কী ধ্বংস করলো?’’

নরসিংদী পুলিশ সুপার মো.

আব্দুল হান্নান বলেন, ‘‘ওসি ডিবি’র বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া মাদক ধ্বংস না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি তদন্ত চলছে। তাই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। প্রথমে সত্য-মিথ্যা যাচাই হোক।’’

হৃদয়//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ধ ব স কর ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

হাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার

নোয়াখালীর হাতিয়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার বুড়িরচরের জোড়খালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা-পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার মো. আলাউদ্দিন সন্দ্বীপ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হরিষপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হাতিয়ার শ্বশুরবাড়িতে পালিয়েছিলেন। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে হাতিয়া থানা হাজতে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে দুপুরের দিকে আদালতে পাঠানো হয়।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মো. আলাউদ্দিন জোড়খালী গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করে সরকার বিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। গোপন সংবাদে বিষয়টি টের পাওয়ার পরই তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি এ কে এম আজমল হুদা জানান, সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আলাউদ্দিন ও তাঁর ১৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে থানায় নাশকতার পরিকল্পনার মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে হাতিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার