শচীনের শততম সেঞ্চুরির মতো এটাও কি একটা রেকর্ড নয়!
Published: 16th, March 2025 GMT
সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত একজনই তা করতে পেরেছেন—শচীন টেন্ডুলকার। ভারতীয় কিংবদন্তি তাঁর শততম সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন ১৩ বছর আগের এই দিনে, ২০১২ সালের ১৬ মার্চে। মিরপুরে সেই ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে ম্যাচটা বছর ঘুরে আসতেই আলোচনায় আসে টেন্ডুলকারের ১০০তম সেঞ্চুরির কারণে। পরদিনের প্রথম আলোয় প্রকাশিত উৎপল শুভ্রর লেখাটি শচীন টেন্ডুলকারের অর্জনের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত একটা তৃপ্তির কথাও বলেছিল.
এক শ সেঞ্চুরি কি নতুন রেকর্ড? রেকর্ড তো অবশ্যই। আবার রেকর্ডও নয়।
রেকর্ড হয় রেকর্ড ভাঙলে। শচীন টেন্ডুলকার তো কারও রেকর্ড ভাঙেননি। সবার ওপরেই ছিলেন। নিজেকে আরেকটু ওপরে তুলে নিলেন, এই যা!
অনেক দিনই শচীন টেন্ডুলকারের অন্য নাম, নিজেকে নিরন্তর ছাড়িয়ে যাওয়ার লড়াই। সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি সেই লড়াইয়ে স্মরণীয়তম জয়। ব্যাটিং রেকর্ডের এভারেস্টে আরোহণ। এখানেও পাল্টা প্রশ্ন, এভারেস্ট? এভারেস্টে তো বসে আছেন সেই কবে থেকেই।
স্মরণীয়তম সেঞ্চুরি হতে পারে, তবে টেন্ডুলকারের সেরা সেঞ্চুরির তালিকায় এটি থাকবে না। তাঁর ৪৯টি ওয়ানডে সেঞ্চুরির মধ্যে এটি ধীরতম, এটাই অনেক কিছু বলে। তার পরও কারণ শুধু এটিই নয়। স্ট্রোক প্লের ছটায় বর্ণিল কোনো শিল্পীকে নয়, কালকের মিরপুর দেখল পরিশ্রমী এক শ্রমিককে। যার কাছে কাজটা শেষ করাই বড় কথা। কীভাবে তা শেষ হলো, তাতে কিছু যায়-আসে না।
সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি অবিশ্বাস্য এক অর্জন। টেন্ডুলকারের নিজেরও হয়তো এমনই মনে হতে শুরু করেছিল। এ কারণেই ৯৯ থেকে ১০০ ছুঁতে এত দিন লেগে গেল। এ কারণেই কালও আশির ঘরে গিয়ে এমন কম্পমান। ভারত হেরে যাওয়ায় টেন্ডুলকারের এই সেঞ্চুরি নিয়ে নিশ্চিত অনেক প্রশ্ন উঠবে। নিজের ‘জয়’ নিশ্চিত করতে গিয়ে দলকে পরাজয় উপহার দিলেন কি না, এমন চরম অপ্রীতিকর প্রশ্নও।
গত এক বছরের টেন্ডুলকারকে দেখে থাকলে সেঞ্চুরি পাওয়ার জন্য এই ব্যাকুলতা কোনো বিস্ময় নয়। বিস্ময় ‘সিন্দাবাদের ভূত’টা ঘাড় থেকে নামানোর পর অমন উদযাপন।
শততম সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করার পর শচীন টেন্ডুলকারউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কর ড
এছাড়াও পড়ুন:
হাজার কোটি টাকা নিট মুনাফার মাইলফলকে সিটি ব্যাংক
২০২৪ সালে এক অনন্য মাইলফলক স্থাপন করেছে দেশীয় মালিকানাধীন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিটি ব্যাংক। গত বছর ব্যাংকটি সমন্বিতভাবে ১,০১৪ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে যা এখন পর্যন্ত ব্যাংকের ৪২ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। সিটি ব্যাংক এককভাবে ১,০৮৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করলেও সহযোগী দুটি প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বাজারমূল্য হ্রাস পাওয়ায় প্রভিশন ব্যয় হওয়ার কারণে ব্যাংকের সমন্বিত নিট মুনাফা ১,০১৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সিটি ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
২০২৩ সালে ব্যাংকটির সমন্বিত নিট মুনাফা ছিল ৬৩৮ কোটি টাকা। সে তুলনায় ২০২৪ সালে সমন্বিত মুনাফা বেড়েছে ৩৭৬ কোটি টাকা বা ৫৯ শতাংশ- যা সিটি ব্যাংকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করে ব্যাংকটি। সেই সঙ্গে ঘোষণা করা হয় ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ, যার মধ্যে ১২.৫ শতাংশ নগদ এবং ১২.৫ শতাংশ বোনাস। গত বছরও একই হারে লভ্যাংশ দিয়েছিল সিটি ব্যাংক। শেয়ারধারীদের অনুমোদনের পর এই লভ্যাংশ বার্ষিক সাধারণ সভায় বিতরণ করা হবে। ঘোষিত নগদ লভ্যাংশে ব্যয় হবে প্রায় ১৭০ কোটি টাকারও বেশি। পাশাপাশি বোনাস হিসেবে প্রতি ১০০ শেয়ারের বিপরীতে ১২.৫টি নতুন শেয়ার দেওয়া হবে।
রেকর্ড মুনাফার প্রভাব পড়েছে ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয়েও। ২০২৩ সালের ৪.৭৪ টাকার তুলনায় ২০২৪ সালে ইপিএস বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৫৩ টাকায়, অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি ৫৮.৯ শতাংশ। একইভাবে শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য বেড়ে হয়েছে ৩৪.৩৯ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৫.৩৮ টাকা বা ২০.৪১ শতাংশ বেশি।
রেকর্ড মুনাফার কারণ জানতে চাইলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখে আমানত রেখেছে। আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৬০ শতাংশ থেকে কমে ৪২ শতাংশে নেমে এসেছে। ফলে মুনাফায় বড় উল্লম্ফন ঘটেছে। আমরা কর্মীদের বেতন বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছি, যা কর্মীদের উৎসাহিত করেছে। আমাদের পরিচালনা পর্ষদ সৎ ও মেধাবী। ব্যাংকে ঈর্ষণীয় পর্যায়ের সুশাসন বিদ্যমান। এসবই রেকর্ড মুনাফার পেছনের মূল কারণ।’
২০২৪ সালে ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ৩১ শতাংশ বা ১২,১৭৭ কোটি টাকা, যেখানে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ শতাংশ বা ৪,৮৩১ কোটি টাকা। এই উদ্বৃত্ত তহবিলের বড় একটি অংশ সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা আগের বিনিয়োগ থেকে ৬,১৫০ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২,৪৮৮ কোটি টাকায়।