টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেব–দেবীর মূর্তি ভাঙার ভিডিও আপলোড করে বিদ্বেষ ছড়ানো, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও উসকানি সৃষ্টির পাঁয়তারার অভিযোগে নেত্রকোনার এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বারহাট্টা উপজেলার ধারাম পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (পশ্চিম) একটি দল।

গ্রেপ্তার তরুণের নাম জোবায়েদ ইসলাম (২২)। তিনি ধারাম পশ্চিমপাড়া এলাকার প্রয়াত আবুল মিয়ার ছেলে। জোবায়েদ পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাঁকে আদালতে সোপর্দ করেছে।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জোবায়েদ ইসলাম ফেসবুকে ‘আয়নার ভালোবাসা’ ও ‘মো.

জোবায়েদ’ নামে দুটি পৃথক আইডি ও ‘আসেন বিনোদন নেই’ নামে একটি পেজ পরিচালনা করেন। এ ছাড়া টিকটকে তাঁর একটি আলাদা আইডি আছে। এসব পেজ ও টিকটকের আইডিতে তিনি বিভিন্ন সময়ে হিন্দু দেব–দেবীদের মূর্তি ভাঙার ভিডিও আপলোড করে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও উসকানি ছড়ান। বিষয়টি নজরে আসার পর নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদের নির্দেশে ডিবি পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে তাঁকে আটক করে। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনও জব্দ করা হয়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় বারহাট্টা থানায় তাঁর নামে মামলা করে। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ আদালতে পাঠায়।

মির্জা সায়েম মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি জোবায়েদের মুঠোফোনের গ্যালারিতেও মূর্তি ভাঙার ভিডিওগুলো পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মূর্তি ভাঙায় তাঁর সম্পৃক্ততারও প্রমাণ মিলেছে। এ ব্যাপারে ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেইন বাদী হয়ে বারহাট্টা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ