মেট্রোরেল কর্মীদের কর্মবিরতি, ভাড়া আদায় ব্যবস্থা অকার্যকর
Published: 17th, March 2025 GMT
এমআরটি পুলিশ সদস্য দ্বারা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন কর্মী মৌখিকভাবে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছে মেট্রোরেল কর্মীরা। ফলে আজ সোমবার সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচলে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যাত্রীদের ভাড়া আদায় করার ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে আছে।
মেট্রোরেলে ফার্মগেট স্টেশন থেকে সকাল সাড়ে আটটার দিকে কারওয়ান বাজারে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী তাপসী রায়। তিনি বলেন, ফার্মগেটে ঢোকার সময় কার্ড পাঞ্চ করার পর তিনি যেতে পেরেছেন। তবে কারওয়ান বাজারে নেমে পাঞ্চ মেশিন তিনি অচল দেখেন। পাঞ্চ না করেই চলে আসতে পেরেছেন। এ সময় সেখানে থাকা কয়েকজন তাঁকে চলে যেতে বলেন। পরে জরিমানা করা হবে কি না জানতে চাইলে তাঁরা বলেন আজকে কিছু করা হবে না। টিকিটের কাউন্টারগুলোও বন্ধ দেখেছেন তিনি। ফলে যাদের এমআরটি ও র্যাপিড পাস আছে শুধু তারাই যাতায়াত করতে পারছেন। কেউ টিকিট কাটতে পারছেন না।
ডিএমটিসিএলের জনসংযোগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো.
রাতে 'ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ‘সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ' ব্যানারে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনা তুলে ধরে ছয়টি দাবি জানানো হয়।
মেট্রোরেল কর্মীদের দাবিগুলো হচ্ছে, আগামী এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা ওই পুলিশ সদস্যকে (এসআই মাসুদ) স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে ও ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব পুলিশ সদস্যকে (কনস্টেবল রেজনুল, ইন্সপেক্টর রঞ্জিত) শাস্তি দিতে হবে এবং তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। মেট্রোরেল, মেট্রো স্টাফ ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে হবে, এমআরটি পুলিশকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, স্টেশনে দায়িত্বরত সিআরএ টিএমও, স্টেশন কন্ট্রোলারসহ অন্য সব কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, অফিশিয়াল পরিচয়পত্র ও অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি যেন স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে এবং আহত কর্মীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচি ঘোষণা করে বলা হয়, দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মেট্রোরেলের সব কর্মী কর্মবিরতি পালন করব এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং মেট্রো স্টেশনে নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করবেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলা হয়, ‘আনুমানিক বিকেল সোয়া ৫টায় দুজন নারী কোনো পরিচয়পত্র না দেখিয়ে সিভিল ড্রেসে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে এসে ইএফও অফিসের পাশে থাকা সুইং গেট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। যেহেতু তারা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না ও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএ নিয়ম অনুযায়ী তাদের সেখান থেকে পিজি গেট ব্যতীত সুইং গেট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চান। তবে, সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কে লিপ্ত হন এবং একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান।'
'পরবর্তীতে ঠিক একইভাবে দুজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেট ব্যবহার করে সুইং গেট না লাগিয়ে চলে যান, উক্ত বিষয়ের কারণ তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা পূর্বের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বে থাকা সিআরএ এর সঙ্গে ইএফও'তে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং ইএফও থেকে বের হওয়ার সময় কর্মরত সিআরএ এর কাঁধে বন্দুক দিয়ে আঘাত করে এবং কর্মরত আরেকজন টিএমও এর শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করে। উপস্থিত স্টেশন স্টাফ ও যাত্রীগণ বিষয়টি অনুধাবন করে উক্ত এমআরটি পুলিশ এর হাত থেকে কর্মরত টিএমওকে পুলিশের কাছ থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর কর ম দ র ল কর ম স আরএ সদস য ত করত ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
ওভালে ১৬ উইকেটের দিন
টেস্ট ক্রিকেট ভিন্ন রকম একটি দিনের দেখা পেল। ব্যাট-বলের সমানে-সমান লড়াই হলো। ওভালে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার শেষ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে চরম রোমাঞ্চও ছড়াল। কিন্তু দিন শেষে কে এগিয়ে সেটা নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই।
দলগতভাবে কে এগিয়ে সেটা পরিস্কার না হলেও নিশ্চিতভাবে বোলাররা আপারফ্রন্টে। কেননা ২২ গজে তাদের পকেটে গেছে ১৬ উইকেট। আগের দিনের ৬ উইকেটে ২০৪ রানের সঙ্গে মাত্র ২০ রান যোগ করতে শেষ ৪ উইকেট হারায় ভারত।
জবাব দিতে নেমে ইংল্যান্ডের ১২ ওভারেই রান বিনা উইকেটে ৯২। অথচ তারাই কি না পরের ১৫৫ রান তুলতে হারায় ১০ উইকেট। ২৪৭ রানে অলআউট হয়ে লিড পায় ২৩ রানের। পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত ২ উইকেটে ৭৫ রান তুলে দিন শেষ করেছে। তাদের লিড ৫২ রানের।
ভারতের প্রথম ইনিংসের রান কতদূর যাবে তা নির্ভর করছিল করুন নায়ারের ওপর। আগের দিন ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। গতকাল দিনের তৃতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ৫৭ রান করে। ভালো করতে পারেনি ওয়াসিংটন সুন্দর। ২৬ রানে থেমে যায় তার ইনিংস। বাকিরা তেমন কিছু করতে পারেনি। ভারতের স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করেছে অতিরিক্ত রান। ইংল্যান্ডের বোলাররা ৩৮ রান দিয়েছেন অতিরিক্ত। যেখানে ওয়াইড বলই ছিল ১৬টি। নো বল ৪টি।
পেসার গুস আটিকসন ৩৩ রানে পেয়েছেন ৫ উইকেট। আরেক পেসার টং পেয়েছেন ৩ উইকেট।
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ছিল উড়ন্ত। দুুই ওপেনার জ্যাক ক্রয়লে ও বেন ডাকেট সামনে যাকে পেয়েছেন তাকেই পিটিয়েছেন। বাউন্ডারির ফোয়ারা ছুটিয়েছেন ২২ গজে। বেন ডাকেট ৪৩ রানে আউট হলে ভাঙে জুটি। আরেক ওপেনার ক্রয়লে অবশ্য ফিফটি তুলে নেন। ৫৭ বলে ১৪ চারে ৬৪ রান করে আউট হন।
ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডারে ভাঙন ধরান পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। ওলি পোপে (২২), জো রুট (২৯) ও হ্যারি ব্রুককে (৫৩) আউট করেন এ পেসার। তাকে সঙ্গ দেওয়া প্রসিদ্ধ কৃষ্ঞা নেন ৪ উইকেট। দুই পেসারের ভয়ংকর আক্রমণে ইংল্যান্ড ভালো অবস্থানে থেকেও বড় কিছু করতে পারেনি।
দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ভারত রাহুল (৭) ও সুদর্শনের (১১) উইকেট হারায়। ফিফটি তোলা জয়সওয়াল ৫১ ও আকাশ দীপ ৪ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে। একটি টেস্ট ড্র হয়েছে। এই ম্যাচ ভারত জিতলে সিরিজ বাঁচাতে পারবে। ইংল্যান্ড জিতলে নিশ্চিত করবে সিরিজ। তৃতীয় দিন শেষে বোঝা যেতে পারে কারা শেষ হাসি হাসবে।
ঢাকা/ইয়াসিন