গাজায় দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি, নিহত ৩০০ ছাড়ালো
Published: 18th, March 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার পর মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০৮ জনে দাঁড়িয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার লাইভ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সময় রাত আড়াইটার পর শুরু হয় ইসরায়েলের হামলা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে।
গাজায় ঘনবসতিপূর্ণ শহর, অস্থায়ী স্কুল, আবাসিক ভবন ও তাবুতে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ওপর রাতভর চলেছে ইসরায়েলের বিমান হামলা।
আরো পড়ুন:
ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেই গাজায় হামলা: হোয়াইট হাউজ
গাজাজুড়ে ফের ভয়াবহ হামলা ইসরায়েলের, নিহত ২৩২
এই হামলা এমন সময়ে হলো, যখন গাজায় মানবিক সংকট চরমে রয়েছে। কেননা সেখানে ইসরায়েল দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সব ধরনের সহায়তা ও পণ্য প্রবেশ বন্ধ রেখেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “হামাস আমাদের জিম্মিদের মুক্তি দিতে বারবার অস্বীকৃতি জানানোর পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফ এবং মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সমস্ত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর এটি করা হয়েছে।”
“ইসরায়েল এখন থেকে ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তির সঙ্গে হামাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে”, এতে আরো বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন লাখেরও বেশি মানুষ।
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ওই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রচেষ্টা চালানো হলেও তা ব্যর্থ হয়। ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে আজকের হামলাটি গাজায় সবচেয়ে বড় হামলা।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট ফক্স নিউজকে বলেছেন, হামলা চালানোর আগে ইসরায়েল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করেছিল।
হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র ফক্স নিউজকে জানিয়েছেন, হামলা চালানোর আগে ইসরায়েল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করেছিল।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই মুখপাত্র বলেন, “হুতি, হিজবুল্লাহ, হামাস, ইরান এবং ইরান-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর উচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে খুব গুরুত্ব সহকারে নেয়া। কারণ ট্রাম্প বলছেন, তিনি আইন মেনে চলা মানুষের পক্ষে দাঁড়াতে এবং যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের বন্ধু ও মিত্র ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়াতে ভয় পান না।”
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস বলেছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভন্ডুল করেছে। আর এর মধ্য দিয়ে গাজায় এখনো আটক থাকা ৫৯ জন জিম্মির ভাগ্য অনিশ্চিত করে তুলেছে তারা।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল র ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে
তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।
কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।
এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)।
বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে।
রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা।
নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা।
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।
বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।
ঢাকা/শংকর/রফিক