শেখ হাসিনা পরিবারের ৩৯৪ কোটি টাকা অবরুদ্ধ
Published: 18th, March 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা ৩১টি হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে ৩৯৪ কোটি ৬০ লক্ষ ৭২ হাজার ৮০৫ টাকা জমা রয়েছে। এ নিয়ে শেখ হাসিনা পরিবারের মোট অবরুদ্ধ টাকার পরিমাণ দাঁড়ালো ১ হাজার ৪৯ কোটি ৬৫ লক্ষ ৭২ হাজার ১১৮ টাকা।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
এদিন এসব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আবেদন করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম।
আবেদনে বলা হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, তার ছোট বোন রেহানা সিদ্দিক ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্টরা বর্ণিত অ্যাকাউন্টের অস্থাবর সম্পদসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে উক্ত হিসাবসমূহ অবিলম্বে অবরুদ্ধ করা আবশ্যক।
এর আগে গত ১১ মার্চ শেখ হাসিনা, তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১২৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন একই আদালত। এর মধ্যে ১২৩টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৬৫৫ কোটি চার লাখ ৯৯ হাজার ৩১৩ টাকা রয়েছে। অন্য একটি অ্যাকাউন্টে শূন্য দশমিক ৬৮ ডলার রয়েছে বলে দুদকের আবেদন সূত্রে জানা যায়।
এদিকে একই দিন শেখ হাসিনা, তার ছেলে জয়, মেয়ে পুতুল, বোন শেখ রেহেনা, রেহেনার সন্তান রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের নামে থাকা জমিসহ বাড়ি ও ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে রয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিকের নামে গুলশানের ফ্ল্যাট, যার দলিল মূল্য ৪৩ লাখ ২৪ হাজার ৯২০ টাকা। সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে ধানমন্ডিতে থাকা ১৬ কাঠা জমিসহ বাড়ি, যার দলিল মূল্য তিন কোটি ৩০ লাখ টাকা।
রেহেনা সিদ্দিকের জব্দকৃত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আট লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকার সাড়ে ৮ শতাংশ জমি, একই জায়গার তিন লাখ টাকা মূল্যের ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ জমি ও সেগুনবাগিচায় ১৮ লাখ টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট। এছাড়াও রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের নামে গুলশানে থাকা ছয়টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবর দ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি
এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’
আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।
আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।
ঢাকা/সৈকত/রাজীব