ভারতের বিপক্ষে শিলংয়ে ২৫ মার্চ এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব খেলবে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের আগে সৌদি আরবে একটি কন্ডিশনিং ক্যাম্প করেছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। ক্যাম্পে ছিলেন ১৮ বছর বয়সী ইতালি প্রবাসী ফুটবলার ফাহমিদুল হক। 

ক্যাম্প শেষে ইতালির সিরি ডি’র ক্লাব ওলবিয়া কালসিওতে খেলা ফাহমিদুল সৌদি থেকে সরাসরি ইতালি ফিরে গেছেন। ভারত ম্যাচের পরিকল্পনায় নেই তিনি। তাকে বাদ দেওয়ায় অবশ্য দেশের ফুটবল অঙ্গনে সমালোচনা হচ্ছে। 

কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা তাকে বাদ দেওয়ার ব্যাখ্যায় জানিয়েছেন, সৌদিতে ফাহমিদুল ভালো অনুশীলন করেছেন। কিন্তু জাতীয় দলে খেলার জন্য এখনো প্রস্তুত নয়। তাকে সময় দেওয়ার পক্ষে তিনি। 

অবশ্য ক্যাম্প থেকে ফিরে যাওয়া ফাহমিদুল আর কখনো জাতীয় দলে ডাক পাবেন কিনা কিংবা তিনি আর বাংলাদেশের জার্সিতে খেলতে চাইবেন কিনা তা নিশ্চিত নয়।

ফাহমিদুলকে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের চূড়ান্ত দলে নেওয়া হয়নি। ভারত ম্যাচের জন্য চূড়ান্ত দল এখনো ঘোষণাই করেননি কোচ ক্যাবরেরা। 

ফাহমিদুলকে শুরুতে ৩৮ জনের প্রাথমিক দলে রাখা হয়েছিল। সৌদি ক্যাম্পে যাওয়ার আগে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন ৯ ফুটবলার। হামজা যেহেতু সৌদি ক্যাম্পে ছিলেন না, ২৮ ফুটবলার নিয়ে সৌদিতে ক্যাম্প করেছে বাংলাদেশ দল। ফাহমিদুল ছিলেন ওই দলে। 

জানা গেছে, সৌদি ক্যাম্প শেষে ফাহমিদুলসহ বাদ পড়েছেন তিন ফুটবলার। এছাড়া কোচ ভারত ম্যাচের জন্য ২৩ জনের দল চূড়ান্ত করবেন বলেও জানা গেছে। ওই হিসেবে টিকে থাকা ২৬ জনের দল থেকে আরও তিন ফুটবলার বাদ পড়তে যাচ্ছেন। ফাহমিদুলকে তাই জাতীয় দলে চূড়ান্ত ধরে সৌদিতে ডাকা হয়নি বরং তাকে ট্রায়ালের জন্য ডাকা হয়েছিল এটা বলাই যায়। 

ফাহমেদুল খেলেন ইতালির সিরি ‘ডি’ লিগে অর্থাৎ চতুর্থ ডিভিশনে। ইতালির সিরি ‘এ’তে খেলে ২০ দল। প্রতি মৌসুম শেষে তিন দল অবনমন হয় এবং তিন দল সিরি ‘বি’ থেকে শীর্ষ লিগে আসে। সিরি ‘বি’ খেলে ২০ দল। সিরি ‘সি’ আবার ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ এই তিন ভাগে বিভক্ত। সেখানে মোট ৬০ দল অংশ নেয়। ‘সি’ থেকে ‘বি’ ও ‘বি’ থেকে ‘এ’ এভাবে ক্লাবগুলো প্রমোশন পায়। 

ফাহমিদুল যে সিরি ‘ডি’ তে খেলেন সেখানে ৯টি (এ থেকে আই) ভাগে মোট ১৬৮টি ক্লাব অংশ নেয়। ফাহমিদুল সিরি ‘ডি’ এর ‘জি’ বিভাগে খেলেন। তার ক্লাব ওলবিয়া পয়েন্ট টেবিলে ১৮ দলের মধ্যে আছে ১০ এ। অর্থাৎ সিরি ‘ডি’র ১৩২ নম্বর ক্লাবে খেলেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য় দল ফ টবল র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ