যুক্তরাষ্ট্র এ রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ মঙ্গলবার রাতে তাঁদের এ আলোচনায় স্থান পেতে পারে আরও নানা বিষয়। ফোনালাপের আগে তাঁদের আলোচনার সম্ভাব্য নানা বিষয় গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে—ইউক্রেনের ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে এ বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে ট্রাম্পের প্রশাসন।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দ্বীপটি দখল করে রাশিয়া। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করে সম্ভাব্য ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তির আগে রাশিয়াকে এ প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। মার্কিন গণমাধ্যম সিমাফোরের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ট্রাম্প ও পুতিনের ফোনালাপ মঙ্গলবার হওয়ার কথা। তাঁদের ফোনালাপের আগে দুটি সূত্রের বরাতে সিমাফোর জানায়, ক্রিমিয়াকে সম্ভাব্য স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা জাতিসংঘকেও আহ্বান জানাতে পারেন। সিমাফোর অবশ্য বলেছে, হোয়াইট হাউস এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। এ প্রস্তাবের মাধ্যমে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ স্থায়ী বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

ক্রিমিয়া আন্তর্জাতিকভাবে ইউক্রেনের অংশ বলে স্বীকৃত। কিয়েভ এ দ্বীপটি ফেরত চেয়ে আসছে। তবে শক্তি প্রয়োগ করে ক্রিমিয়া ফেরত পাওয়া এখন অনেকটাই অসম্ভব।

ক্রিমিয়া প্রসঙ্গে ক্রেমলিন বলে আসছে, এটা তাদের অংশ। এটা ইউক্রেনের জন্য চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ক্রিমিয়া ছাড়াও যুদ্ধবিরতির শর্তে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের অঞ্চল ও রাশিয়ার ভেতরে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চল নিয়েও ভাগাভাগির বিষয়টি থাকতে পারে। যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে রাশিয়া দাবি করে আসছে, তারা যেসব অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তার আশা কিয়েভকে ছাড়তে হবে। এ ছাড়া ইউক্রেন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর অংশ হতে পারবে না। একই সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেনে কোনো বিদেশি সেনা মোতায়েন মস্কো মানবে না।

এ মাসেই সৌদি আরবে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কিয়েভের বৈঠকের পর ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সামনে আসে। কিয়েভ এতে তাদের সম্মতি দিয়েছে। তবে পুতিন বলেছেন, যুদ্ধবিরিতর প্রস্তাবটিতে তিনি রাজি থাকলেও এতে গুরুতর অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিন ফোনে এ নিয়ে কথা বলতে চান। অন্যদিকে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে পুতিনের আহ্বানে সাড়া দেওয়া হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবারের ফোনালাপ।

ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে অবশ্য ফোনালাপে দ্বপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের বিষয়টির কথা বলা হয়। একই সঙ্গে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার কথা বলা হয়। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউক্রেন সংঘাত নিরসন এবং রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে আলোচনা করবেন দুই নেতা।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপে নির্দিষ্ট কিছু বোঝাপড়া আগেই হয়েছে। কিন্তু আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও স্বাভাবিকীকরণ এবং ইউক্রেন বিষয়ে একটি মীমাংসা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। দুই প্রেসিডেন্ট এসব নিয়ে আলোচনা করবেন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ