এবার ঈদ ফ্যাশনে গহনার ক্ষেত্রে এসেছে নতুন নতুন ট্রেন্ড, যেখানে ঐতিহ্যবাহী শৈলীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। হাল ফ্যাশনের গহনাও এবার নতুনভাবে ফিরতে দেখা যাচ্ছে। ডিজাইনাররা বলছেন, এবার বাজারে সোনালি, রুপালি আর কপার টোনের গহনার পাশাপাশি কাপড়, কড়ি, পাথর, রেজিন, ক্লে দিয়ে তৈরি গহনা এবং মিনিমালিস্টিক গহনাও বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
স্বর্ণ ও হালকা গহনা
ঐতিহ্যগতভাবে স্বর্ণের গহনা ঈদের সাজের মূল আকর্ষণ হলেও, এবারের ট্রেন্ডে দেখা যাচ্ছে হালকা ও নকশাদার ডিজাইনের প্রাধান্য। বড় গহনার পরিবর্তে ছোট, নান্দনিক ও পরিধানে স্বাচ্ছন্দ্যময় গহনাগুলো বেশি চাহিদা পাচ্ছে। যেমন– পেনডেন্ট, ব্রেসলেট, বিশেষ করে ফিলিগ্রি কারুকাজ, লতাপাতা ডিজাইন এবং চেইন জুয়েলারির চাহিদা বেড়েছে। আবার ঈদের থিমের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদ ও তারার শেপের হালকা মেটাল গহনাও বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।
সিলভার ও অক্সিডাইজড গহনা
বাহারি রঙের স্টোন বসানো কানের দুল, নাকফুল ও চোকারের প্রতি ফ্যাশনপ্রেমীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। অক্সিডাইজড গহনার মধ্যে ব্ল্যাক, ব্রোঞ্জ আর অ্যান্টিক ডিজাইন বেশি চলছে।
পার্ল ও কুন্দনের নকশা করা গহনা
এবারের ঈদে পার্ল ও কুন্দনের গহনার চাহিদাও বেড়েছে। কুন্দন সেট, ঝুমকা, নেকলেসের প্রতি অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন, বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী শাড়ি ও সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে মানানসই হওয়ায়। পার্লের মাল্টি-লেয়ার নেকলেস ও ব্রেসলেটও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যারা একটু ক্ল্যাসিক এবং রাজকীয় লুক চান তাদের জন্য কুন্দন ও পার্ল গহনা আদর্শ।
মিনিমালিস্ট ও স্টেটমেন্ট পিসের গহনা
যারা হালকা সাজ পছন্দ করেন তাদের জন্য মিনিমালিস্ট গহনা এবার দারুণ ট্রেন্ডি। স্টেটমেন্ট গহনাগুলো সাধারণত একনজরেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং এক্সক্লুসিভ লুক দেয়।
কাস্টমাইজড গহনা
অনেকেই নিজের পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কাস্টমাইজড গহনার দিকে ঝুঁকছেন। কাপড়ের তৈরি গহনা এবার ট্রেন্ডের শীর্ষে রয়েছে বলা যায়। কাপড়, কড়ি ও মেটালের সংমিশ্রণে তৈরি বাহারি ডিজাইনের চুড়ি, কানের দুল, নেকলেস, আংটি বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া কাস্টমাইজড রেজিন ও ক্লে দিয়ে তৈরি গহনাও বেশ সাড়া ফেলেছে, যেখানে স্থান পাচ্ছে বিভিন্ন মোটিফ। v
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।