হাসিনাকে আওয়ামী লীগ নেতার স্বরচিত গান শোনানোর অডিও ভাইরাল, প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ
Published: 19th, March 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনলাইনে বরগুনার এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতার স্বরচিত গান শোনানোর অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় ফোরকান ফরাজী নামের ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতার শাস্তির দাবিতে আজ বুধবার সন্ধ্যার পর বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা–কর্মীরা।
মঙ্গলবার রাত থেকে ওই ফোনালাপটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বাড়িতে গিয়ে ফোরকানকে খুঁজতে থাকেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু ফোরকান গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ফোরকান ফরাজী তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি।
ছড়িয়ে পড়া অডিওতে শোনা গেছে, একটি অনলাইন সভায় কথা বলার সুযোগ পেয়ে ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে’ নিজের লেখা গান শোনাতে চান ফোরকান ফরাজী। অনুমতি পেয়ে তিনি গানটি গেয়ে শোনান। শেষে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গানটির প্রশংসা করে টিকটকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব রিয়াজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে শেখ হাসিনার একটি কল রেকর্ড ভাইরাল হওয়ার প্রতিবাদে বুধবার সন্ধ্যার পর স্থানীয় লাউপাড়া বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে।
তালতলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল হক বলেন, ফোরকান ফরাজীর এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, ফোনালাপ শুনেই ফোনকারকে গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশবাসী দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষ ২০ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি এবং নতুন প্রজন্মও ভোট দিতে পারেনি। তাই, তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পথেই এগিয়ে যাবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের যে ত্যাগ, সে পথেই দেশ অগ্রসর হবে।
প্রধান উপদেষ্টার মতো বিএনপিও রোজার আগে বিচার ও সংস্কারের অগ্রগতি চায় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সংস্কারের বিষয়টি ঐকমত্যের ওপর নির্ভরশীল। এ বিষয়ে ড. ইউনূস, তারেক রহমান এবং বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ আগেই বলেছেন।
তিনি মনে করেন, ঐকমত্য হতে এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে। বিচার বিভাগ বিচার করবে এবং বিচারের আওতায় আনারও বিষয় আছে। যারা বিচারের আওতায় আসবে, তার জন্য আরো প্রায় ছয় মাস সময় আছে। আর যারা এর মধ্যে আসবে না, তাদের জন্য তো আগামী সরকার আছে।
সরকারের কি এখন নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক এবং জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর কোনো পথ নেই। এ বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পোষণ করছেন।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকার বিশেষ সম্পর্ক করছে, বিএনপি বিষয়টি কীভাবে দেখছে? এ প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, “আমি একটা জিনিস মনে করি, আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে এখানে সবার মতামত নেওয়ার সুযোগ আছে। সুতরাং, সবাই তাদের মতামত দিতে পারে। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের গণতন্ত্রের বড় পাওয়া, সবাই নিজেদের মতামত দেবে। এর মধ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
বিএনপি এত দিন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও এখন কেন ফেব্রুয়ারিতে গেল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেক সময়। এবং এত সময়ও লাগার কোনো কারণ নেই। বিএনপি আগে ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব সমস্যার সমাধান করে নির্বাচনের কথা বলেছে। সুতরাং, ফেব্রুয়ারি আরো দীর্ঘ সময়। তবে, যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
আমীর খসরু বলেন, “আমি আগেও বলেছি, যত বেশি ঐকমত্যের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারব, সেটা জাতির জন্য তত ভালো। আমরা যে ঐকমত্যের মধ্যে এসেছি, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “ঐকমত্য থাকার ফলেই আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পেরেছি। সুতরাং, আমরা চেষ্টা করব, যেখানেই সম্ভব ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব।”
তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকে নির্বাচনে নিরপেক্ষতার বিষয়ে কোনো আলোচনা বা বার্তা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখনই নির্বাচন শুরু হবে, তখনই সরকার নিরপেক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের ধারণা হলো— একটি নিরপেক্ষ সরকার। সুতরাং, নির্বাচনে সেই নিরপেক্ষতা সরকার নিশ্চিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বৈঠকে সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান বলেছেন, এখানে যতটুকু ঐকমত্য হবে, সংস্কারও ততটুকুই হবে। বাকি অংশটা নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া। এটি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না, নির্বাচনের পরেও এটি চলমান থাকবে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক