ভোলার মনপুরায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. রাশেদ নিহত হয়েছেন। বুধবার রাত ৯টার দিকে বরিশাল থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন।

নিহত মো. রাশেদ (২৭) মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে এবং সাকুচিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এই ঘটনার তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরউদ্দিন বাজার এলাকায় বাঁধ নির্মাণকাজের ঠিকাদারি নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। এর মধ্যে এক পক্ষের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম এবং আরেক পক্ষের নেতৃত্বে ভোলা–৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম। বুধবার সকালে বাঁধের নির্মাণকাজের ঠিকাদারি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে রাশেদসহ ১০ জন আহত হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষে গুরুতর আহত রাশেদকে প্রথমে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। পরে স্বজনেরা তাঁকে নিয়ে গাড়িতে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। পথে ফরিদপুরের কাছে পৌঁছলে রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান। নিহত রাশেদ সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলমের সমর্থক।

এ বিষয়ে চেষ্টা করেও সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে মনপুরা থানার ওসি আহসান কবির রাশেদ বলেন, স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন। আলম পক্ষের অভিযোগ, নুরুল ইসলাম নয়ন পক্ষের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কর্মীরা যোগ দিয়ে আলম পক্ষের কর্মীদের সঙ্গে মারামারি করেছে। এ বিষয় নিহতের ভাই রাতেই থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁরা তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ