গাজায় হামলা অব্যাহত আলোচনা চায় হামাস
Published: 20th, March 2025 GMT
দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন স্থানে নতুন করে রাতভর বিমান হামলা চালিয়ে অন্তত ২৭ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। পবিত্র রমজান মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে দখলদার ইসরায়েলের গাজায় চালানো নির্বিচার হামলায় গত দু’দিনে অন্তত ৯৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া মঙ্গলবার ভোরে গাজায় পুনরায় বোমাবর্ষণে নিহত ৪৩৬ জনের মধ্যে ১৮৩ শিশু রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হামাস কর্মকর্তা তাহের আল-নোনো বলেছেন, গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ সত্ত্বেও তারা আলোচনার দরজা বন্ধ করেননি। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, স্বাক্ষরিত চুক্তি থাকলে নতুন চুক্তির প্রয়োজন নেই।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পেয়ে মূলত হামাসের যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী কেবল হামাস যোদ্ধাদেরই লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। এরই মধ্যে গাজার বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
নেতানিয়াহু মঙ্গলবার রাতে বলেছেন, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে পূর্ণ শক্তিতে যুদ্ধ আবার শুরু করেছে তাঁর দেশ। এক ভিডিও বিবৃতিতে নেতানিয়াহু নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরুর প্রসঙ্গে সতর্ক করে বলেন, ‘এটা কেবল শুরু।’ হামাসের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামলার মধ্যেই তা চলবে।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) ভয়াবহ হামলার প্রতিবাদে হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারীরা।
গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে ট্রাম্প প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। তেল আবিবে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে হাজারো ইসরায়েলি বিক্ষোভ করেছেন। ইসরায়েলি হামলায় নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছে সৌদি আরব। খবর আলজাজিরা ও বিবিসির।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের ৯ ভবন ধ্বংস করল ইরান
ইসরায়েলের হামলার জবাবে নতুন করে ইরানের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর জেরুজালেম ও তেল আবিবে বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এতে একজন নিহত এবং প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। পাশাপাশি অন্তত নয়টি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হারেৎজ সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিবের কেন্দ্রস্থলে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি উঁচু ভবনে আঘাত হানায় ভবনটির নিচের এক-তৃতীয়াংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেল আবিবের শহরতলির রামাত গানেও নয়টি ভবন ধ্বংস হয়েছে।
ইরান দেড় শতাধিক মিসাইল ছুঁড়েছে বলেও জানিয়েছে সংবাদপত্রটি। এদিকে কিছুক্ষণ আগে (বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে) জেরুজালেমের আকাশে ফের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের একটি নতুন ঢেউ ইসরায়েলের দিকে এগিয়ে আসছে। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েল রাষ্ট্রের দিকে আরও একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। আইডিএফ এর আগে নতুন করে হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছিল এবং বলেছিল যে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলায় হতাহতের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোররাতে ইরানে হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। নৃশংস এই হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, বিজ্ঞানীসহ অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছে। দখলদার বাহিনীর হামলায় আহত হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ। এই হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান।