ব্যক্তিগত ও বিজনেস অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীদের জন্য ব্রডকাস্ট মেসেজ পাঠানোর সীমা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ। নতুন এ উদ্যোগের আওতায় একজন ব্যবহারকারী প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৩০টি ব্রডকাস্ট মেসেজ পাঠানোর সুযোগ পেতে পারেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ব্রডকাস্ট মেসেজ পাঠানোর সীমা নির্ধারণের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হবে। ব্যবহারকারীদের অতিরিক্ত ব্রডকাস্ট মেসেজ পাঠানো ঠেকানোর পাশাপাশি স্প্যাম বার্তা কমানোর লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ।

হোয়াটসঅ্যাপের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট গ্রাহকদের লক্ষ্য করে কাস্টমাইজড ব্রডকাস্ট মেসেজ পাঠাতে পারবেন। এতে পণ্যসংক্রান্ত আপডেট, বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা বা অন্যান্য বিপণনমূলক বার্তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ে বার্তা পাঠানোর (শিডিউল) সুবিধাও দেওয়া হবে। পরীক্ষামূলক পর্যায়ে বিজনেস অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীরা বিনা মূল্যে ২৫০টি কাস্টমাইজড ব্রডকাস্ট মেসেজ পাঠানোর সুযোগ পাবেন।

আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে যে ৮ কাজ কখনো করবেন না ১০ জুন ২০২৪

হোয়াটসঅ্যাপের তথ্যমতে, ব্যবহারকারীরা যেন অতিরিক্ত বার্তার চাপে বিরক্ত না হন এবং শুধু প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ব্রডকাস্ট মেসেজ দেখতে পান, সে লক্ষ্যে কাজ করছে হোয়াটসঅ্যাপ। নতুন এ উদ্যোগের আওতায় ব্রডকাস্ট মেসেজ পাঠানোর নিয়মে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস অ্যাপের লোগোতেও পরিবর্তন আনা হবে।

আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে কল করার নতুন চার সুবিধা১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, গত কয়েক বছরে হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস অ্যাকাউন্ট গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে। হোয়াটসঅ্যাপের বিজনেস অ্যাকাউন্ট থেকে বিপণন, গ্রাহকসেবা ও ভেরিফিকেশনের মতো বিভিন্ন ধরনের বার্তা পাঠানোর জন্য অর্থ প্রদান করতে হয়। এত দিন বিজনেস অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীরা বিনা মূল্যে সীমাহীন ব্রডকাস্ট মেসেজ পাঠাতে পারলেও শিগগিরই অর্থের বিনিময়ে এ সুযোগ ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে হোয়াটসঅ্যাপের আয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে।

সূত্র: টেক ক্রাঞ্চ

আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে বার্তা ও ছবি নিরাপদ রাখতে ব্যবহার করতে হবে এই ৫ সুবিধা১১ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প র ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ