৩ এপ্রিলও ছুটি, এবার ঈদে টানা ৯ দিন সরকারি ছুটি
Published: 20th, March 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল ফিতরে এবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঘোষিত লম্বা ছুটি আরও লম্বা হলো। ঈদ উপলক্ষে আগেই পাঁচ দিন টানা ছুটি ঘোষণা করেছিল সরকার। সেখানে এখন নির্বাহী আদেশে আরও একদিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ৩ এপ্রিলও ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর ফলে এবার ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা নয় দিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক সূত্রে ৩ এপ্রিলও ছুটি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩১ মার্চ পবিত্র ঈদুল ফিতর হতে পারে। সম্ভাব্য এই তারিখ ধরে আগেই পাঁচ দিনের ছুটির তারিখ নির্ধারণ করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই হিসাবে কাগজপত্রে ২৯ মার্চ শুরু হচ্ছে ঈদুল ফিতরের ছুটি। কিন্তু নির্ধারিত ছুটি শুরুর আগের দিন ২৮ মার্চ সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার। একই সঙ্গে একই দিন পবিত্র শবে কদরেরও ছুটি। ফলে বাস্তবে ছুটি শুরু হচ্ছে ২৮ মার্চ থেকে।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ছুটি শেষে অফিস খোলার কথা ছিল ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার। তার পরের দুই দিন আবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার। এখন ৩ এপ্রিলও নির্বাহী আদেশে ছুটি হওয়ায় ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা নয় দিন ছুটি ভোগ করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অবশ্য এই ছুটি শুরুর দুই দিন আগে আছে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ছুটি। পরদিন বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ এক দিন অফিস খোলা থাকবে।
বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন প্রায় ১৫ লাখ। ছুটির বিধিমালা অনুযায়ী, দুই ছুটির মাঝে নৈমিত্তিক ছুটি নেওয়ার নিয়ম নেই। নিলে তা টানা ছুটি হয়ে যাবে। অবশ্য অর্জিত ছুটি নেওয়ার সুযোগ আছে। এ ছাড়া ঐচ্ছিক ছুটি নেওয়ারও সুযোগ আছে। অবশ্য প্রত্যেক কর্মচারীকে বছরের শুরুতে নিজ ধর্ম অনুযায়ী নির্ধারিত তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ ছুটি, নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে যুক্ত করে ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার অনুমতি দেওয়ার সুযোগ আছে।
আরও পড়ুনসাধারণ ছুটি, নির্বাহী আদেশে ছুটি ও ঐচ্ছিক ছুটি কী, কখন কাদের জন্য এসব ছুটি হয়১৯ মার্চ ২০২৫জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, যেসব অফিসের সময়সূচি ও ছুটি তাদের নিজস্ব আইনকানুন দিয়ে চলে (যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক) অথবা যেসব অফিস, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের (জরুরি সেবাসংক্রান্ত) চাকরি সরকার অত্যাবশ্যক হিসেবে ঘোষণা করেছে, সেগুলো নিজস্ব আইনকানুন অনুযায়ী জনস্বার্থ বিবেচনা করে এই ছুটি ঘোষণা করবে।
দেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে কর্মকর্তা-কর্মচারী দুই লাখের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ঈদ সামনে রেখে প্রতিবছর বিশেষ ব্যবস্থায় সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের কিছু শাখা খোলা রাখা হয়। তবে এবার এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।
পোশাকশিল্পে ছুটিম্যাপড ইন বাংলাদেশের (এমআইবি) ডিজিটাল মানচিত্র অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা আছে ৩ হাজার ৫৫৫ টি। এসব কারখানায় কাজ করেন ৩০ লাখ ৫৩ হাজার শ্রমিক।
সুযোগ থাকলে ঈদের দু-তিন দিন আগে শ্রমিকদের ছুটি দিতে কারখানার মালিকদের অনুরোধ করেছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের ছুটির আগে শিপমেন্টের চাপ থাকে। সে জন্য অধিকাংশ কারখানা শেষ কর্মদিবসে ছুটি দেয়। তবে কারও সুযোগ থাকলে আগে শ্রমিকদের ছুটির দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
আরও পড়ুন৩ এপ্রিলও ছুটির প্রস্তাব, অনুমোদন হলে ঈদে ছুটি হবে টানা ৯ দিন১৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ২৮ ম র চ অন য য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
করিডর দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে হবে নির্বাচিত সংসদ থেকে: তারেক রহমান
করিডর দেওয়া না–দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জনগণের কাছ থেকে আসতে হবে বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মহান মে দিবসে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে ‘করিডর’ নিয়ে কথা বলেন তারেক রহমান। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর জন্য ‘মানবিক করিডর’ স্থাপন নিয়ে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ মনে করে, করিডর দেওয়া না–দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের কাছ থেকে। সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক বিশ্বের দেশে দেশে এটাই নিয়ম, এটাই রীতি।’
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত এই সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, অভ্যন্তরীণ যুদ্ধে লিপ্ত মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশকে করিডর হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার নাকি নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিন্তু জনগণকে জানায়নি। এমনকি জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কোনো আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করেনি।
দেশের জনগণকে না জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে কি না কিংবা নেওয়া উচিত কি না, এই মুহূর্তে সেই বিতর্ক তুলতে চান না উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির বক্তব্য স্পষ্ট—বিদেশিদের স্বার্থ নয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে সবার আগে দেশের জনগণের স্বার্থ নিশ্চিত করতে হবে।
ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পর এ বছর রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে সহনীয় থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানান তারেক রহমান। তবে তিনি বলেন, রমজান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার চাল ও তেলের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চাল–তেলের দাম বেড়েছে কিন্তু মানুষের আয় বাড়েনি। তাহলে জনগণ এখন তাদের এমন ভোগান্তির কথা কার কাছে, কোথায় কীভাবে বলবে?
নয়াপল্টনে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে সমাবেশে নেতা-কর্মীদের একাংশ। ঢাকা, ১ মে