‘ছোট সাজ্জাদ’কে ধরিয়ে দেওয়ায় নারীকে হত্যার হুমকি
Published: 20th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ‘ছোট সাজ্জাদ’কে পুলিশে ধরিয়ে দিতে সহায়তা করায় বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীরা হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক নারী। পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে গত বুধবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছেন তিনি। মামলার বাদী রুমা আক্তার একজন নারী উদ্যোক্তা। তার বিউটি পার্লার ও বুটিক হাউস রয়েছে।
আসামিরা হলেন-সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না, পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খান, হাবিব খান, সাজ্জাদের সহযোগী মো.
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ার পর থেকে তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে বাদীকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন। এছাড়া গত মঙ্গলবার বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খান ও হাবিব খান মুঠোফোনে বাদীকে ফোন করে হুমকি দিয়েছেন। তারা এক কোটি টাকা চাঁদাও দাবি করেন। নইলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে রুমা আক্তার আরও উল্লেখ করা হয়, গত শনিবার ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মলে কেনাকাটা করতে যান তিনি ও তার স্বামী। সেখানে সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীকে দেখতে পান। পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত সন্ত্রাসীকে দেখে চিনতে পেরে আশপাশের লোকজনকে জড়ো করে তাকে আটক করা হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সাজ্জাদকে আটক করে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায়।
মামলার বাদী রুমা আক্তার বলেন, ‘পলাতক সন্ত্রাসীকে দেখে লোকজন জড়ো করে সচেতন নাগরিক হিসেবে ধরিয়ে দিয়েছি। এখন আমি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না বলেন, ‘আমি কাউকে হুমকি দিইনি।’ তবে সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পরদিন ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে শারমিন আক্তার তামান্নাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’
সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ চট্টগ্রামের এক সময়ের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খানের অনুসারী। তার বিরুদ্ধে মো. মো. আনিস, মাসুদ কায়সার ও আফতাব উদ্দীন তাহসীন হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। গত ৫ ডিসেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশকে গুলি করতে করতে পালিয়ে যায় সাজ্জাদ। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ চারজন আহত হন। গত ২৮ জানুয়ারি ফেসবুক লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে প্রকাশ্য পেটানোর হুমকি দেন। এরপর ৩০ জানুয়ারি তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে সিএমপি। গত ১৫ মার্চ রাজধানী বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবর্তন কেবল পরিবর্তনের জন্য নয়, কোনটা বিভেদ, খেয়াল রাখতে হবে: মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, কসমেটিক পরিবর্তন দিয়ে বাংলাদেশের আঠারো কোটি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন সম্ভব নয়। প্রকৃত পরিবর্তনের জন্য প্রথমে মানুষের অন্তরের পরিবর্তন দরকার।
আজ শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন আবদুল মঈন খান। ‘ফিরে দেখা রক্তঝরা জুলাই আগস্ট প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি’ শীর্ষক কথকতার আয়োজন করে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
আবদুল মঈন খান বলেন, ‘বলা হচ্ছে সংবিধানের কিছু পরিবর্তন হবে, কিন্তু আমি বলব, পুরো সংবিধান পাল্টে দিলেও যারা সংবিধান তৈরি ও পালন করে, এ দেশের জনগণের অন্তরের পরিবর্তন না হলে কোনো লাভ হবে না। আমরা পরিবর্তন চাই, কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, পরিবর্তন কেবল পরিবর্তনের জন্য নয়। কোনটা বিভেদ, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে ১৬শ হত্যাকাণ্ডের জন্য ১৬শ মামলা হওয়া উচিত ছিল।’ এ প্রসঙ্গে আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমি আইনজ্ঞ না হয়েও বলছি, যদি ১৬শ মামলা হয়, তাহলে আধুনিক বিচারব্যবস্থায় এসব মামলার বিচার হতে ১৬শ বছর লাগবে। বরং বাংলাদেশে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তার বিচারের জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট। আর কোনো সৎ সাহসী সরকার হলে ১৬ ঘণ্টায় এই বিচার সম্পন্ন করা সম্ভব।’
চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও মানুষের আকাঙ্ক্ষা কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা সংস্কারের কথা বলছি, আমি প্রশ্ন করতে চাই, যে প্রত্যাশা নিয়ে চব্বিশের জুলাই–আগস্ট এসেছিল, আজকের জুলাই–আগস্টে তার কতটা পূরণ হয়েছে? দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের সময়ে যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছিলাম, সেটা কি পূরণ হয়েছে? কেন আমাদের উত্তরণ হয়নি, সেই প্রশ্ন করতে হবে।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের কথা সবাই বললেও কেউ শহীদদের ধারণ করছে না বলে মন্তব্য করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের গল্প অনেকটা একাত্তরের গল্পের মতো হয়ে যাচ্ছে। সবাই বলছে, কিন্তু শহীদদের কেউ ধারণ করছে না। এসব চিহ্ন দেখলে মনে হয়, প্রকৃতপক্ষে নতুন বন্দোবস্ত হচ্ছে না। বরং আমরা পুরোনো ধারায় থেকে যাব। সরকারের পক্ষ থেকে এখনো শহীদের সঠিক তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল।’
রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘ফিরে দেখা রক্তঝরা জুলাই আগস্ট প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি’ শীর্ষক কথকতায় বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। আজ শনিবার সকালে