ভুল চিকিৎসার অভিযোগ, ফেনীতে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 20th, March 2025 GMT
ফেনীতে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নামের এক চক্ষু চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনীর আমলি আদালতে বকুল চৌধুরী নামের এক নারী ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই নারী তাঁর ১১ বছরের শিশুপুত্রের চোখের ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে মামলাটি করেন।
আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বিচারিক হাকিম) অপরাজিতা দাশ মামলাটি গ্রহণ করে ফেনীর সিভিল সার্জনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত শিশুটি ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চোখ থেকে পানি পড়ার সমস্যা নিয়ে বকুল চৌধুরী তাঁর শিশুকে নিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি ‘ফেনী আই সেন্টার’–এর চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর চেম্বারে যান। চিকিৎসকের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ানোর পর শিশুটির সারা শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে পুরো শরীরে ফোসকা পড়ে যায়। পরবর্তী সময়ে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ফেনীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিলে চিকিৎসকেরা জানান, ভুল চিকিৎসার কারণে শিশুটির এ অবস্থা হয়েছে। পরে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ১০ দিন চিকিৎসা শেষে বর্তমানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে শিশুটি বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে।
ওই মাদ্রাসাছাত্রের মা বকুল চৌধুরী বলেন, ভুল চিকিৎসায় তাঁর ছেলে দুই চোখ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। এ জন্য প্রতিকার চেয়ে তিনি মামলা করেছেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ফেনী কোর্টের অতিরিক্ত সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) হুমায়ুন কবির বলেন, ভুল চিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্ত শিশুটির মা আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ফেনীর সিভিল সার্জনকে আগামী ২৮ মের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত চক্ষু চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘রোগীর চোখে সমস্যা হয়ে থাকলে আমার সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল। তা না করে তাঁরা মামলা করেছেন। এখন বিষয়টি আদালতের ব্যাপার। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন, আমি মাথা পেতে নেব।’
ফেনীর সিভিল সার্জন মোহাম্মাদ রুবাইয়াত বিন করিম বলেন, আদালত থেকে মামলাসংক্রান্ত কোনো নথি আজ বিকেল পর্যন্ত সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এসে পৌঁছায়নি। নথি হাতে পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন নির্ধারিত তারিখের মধ্যে আদালতে দাখিল করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ভ ল স র জন চ ক ৎসক র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?