দেশের চলমান সংকট সমাধানের একমাত্র পথ নির্বাচন: ফখরুল
Published: 21st, March 2025 GMT
দেশের চলমান সংকট সমাধানের একমাত্র পথ নির্বাচন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “দেশের চলমান সংকট সমাধানে একমাত্র পথ নির্বাচন। জাতির সামনে সবচেয়ে বড় উইজডম হবে নির্বাচন। নির্বাচন ছাড়া সংকট সমাধান হবে না।”
শুক্রবার (২১ মার্চ) বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবীদের সম্মানে রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে বিএনপির ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি। ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আরো পড়ুন:
বিএনপি সংস্কারের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: ফখরুল
আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক
দ্রুত সংস্কার শেষে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে: ফখরুল
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা বার বার বলছি, এখন যে সমস্যা, সংকট, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য অত্যন্ত দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা দরকার। প্রয়োজনীয় যে সংস্কার বা পরিবর্তন দরকার নির্বাচনের জন্য সেটি সম্পন্ন করে নির্বাচন অনুষ্ঠান করাই হবে এখন সবচেয়ে বড় উইজডমের কাজ। এখন উইজডমের কাজটা করাই বোধহয় সবচেয়ে ভালো হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বার বার একই কথা বলছেন, আমরা যেন আমাদের পথকে ভুলে না যাই, আমরা যেন আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত হই। একই সঙ্গে এমন কোন ব্যবস্থা না নেই যা আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিশেষ করে উনি গত পরশু যে বক্তব্য দিয়েছেন, বাংলাদেশে যে উগ্রবাদের জন্ম হচ্ছে, এই উগ্রবাদ আমাদের গণতান্ত্রিক পথকে বিঘ্নিত করবে। আমরা যেন সে পথে না যাই।”
ফখরুল বলেন, “ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, গোটা জাতি সুসময়ের অপেক্ষা করছে। আমরা অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে, বিতাড়িত করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছি। এই সময়টা সবাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। সবাই এমনভাবে কথা বলবেন যেন গণতন্ত্রের পথ সুগম করা যায়। একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংসদ গঠন হবে সেই প্রত্যাশা নিয়ে মানুষ ও গোটা জনগণ অপেক্ষা করছে।”
তিনি বলেন, “সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, অথচ দু-বছর আগেই সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে। এটা যথেষ্ট রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য। তারপরও আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের যে প্রস্তাব তা পরীক্ষা করছি এবং আমরা আমাদের মতামতগুলো উপস্থাপন করছি। তবে একটা জিনিস আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক ঐতিহ্য, তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ, তাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবকিছু কে সামনে রেখেই আমাদের কে সামনের দিকে সংস্কার এবং এগিয়ে যাবার পথ বেছে নিতে হবে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “অলিক ধারণা নয়, শুধু অলীক ধারণা থেকে, বিভিন্ন রকম ইউটোপিও চিন্তা থেকে চিন্তাভাবনা করলে সমস্যার সমাধান করা যাবে না, অথবা আবেগের মধ্য দিয়েও সমস্যার সমাধান করা যাবে না, আমাদের বাস্তববাদী চিন্তা করে, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, পরিবর্তনকে সামনে নিয়ে নতুন বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।”
তিনি বলেন, “সতর্কতার সঙ্গে পথ পাড়ি দিতে হবে, জনগণকেও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। সবাই মিলে দায়িত্ব নিয়ে ট্রানজিশন পিরিয়ডকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে হবে।”
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ আম দ র ফখর ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।