বন্দরে হাই সাহেবের মোড়-সাবদী রাস্তার বেহাল দশা, জনভোগান্তি চরমে
Published: 21st, March 2025 GMT
বন্দর থানাধীন বন্দর ইউনিয়নের মিনারবাড়ির হাই সাহেবের মোড় থেকে সাবদী পর্যন্ত রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও বিগত দিনের জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বহীণতার কারণে বছরের পর বছর রাস্তাটি অনেকটা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
প্রায় বছর খানেক আগে পাকা রাস্তাটি ভেঙ্গে ইটের খোয়া বিছানো হলেও অদ্যাবধি তার কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। যে কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই এই রাস্তাটিতে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে।
পুরো রাস্তা জুড়ে খান্দা-খন্দক থাকায় এক প্রকার চরম দুর্ভোগেই চলালচল করতে হচ্ছে বিবিজোড়া,মিরকুন্ডী,বালুচর,রুস্তমপুর,ছনখোলা,চিনারদী,আইসতলা, সাবদী ও কলাগাছিয়াসহ সোনারগাঁয়ের এলাহিনগর ও শম্ভুপুরা অঞ্চলের জন সাধারণকে।
রাস্তার এহেন অবস্থার ফলে প্রতিদিনই এই রাস্তাটিতে ঘটছে ছোট ও বড় ধরণের দুর্ঘটনাও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মীরকুন্ডি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মান্নান মিয়া জানান,হাই সাহেবের মোড় থেকে সাবদী পর্যন্ত রাস্তাটি অনেক দিন ধরেই ভাঙ্গাচুড়া।
আমরা খুব কষ্টে এই রাস্তায় চলাচল করি। আমি নিজেও বেশ কয়েকবার আহত হয়েছি। অনেক সময় যাত্রী বোঝাই গাড়িগুলোও উল্টে যায়।
বিবিজোড়া এলাকার জনৈক দোকানী মকবুল হোসেন একই শর্তে জানান,আমরা সপ্তাহের একবার কাইকারটেক হাটে যাই সদাই পাতি কেনার জন্য কিন্তু রাস্তাটির কারণে ঠিক মতো হাট থেকে মালামাল আনতে পারি না। একেতো রাস্তা ভাঙ্গা কোন ড্রাইভাররা আসতে চায়না তার উপরে রাস্তার ভাঙ্গা থাকার কারণে ভাড়াও ডাবল ডাবল রাখে। না দিয়েও উপায় নেই। কারণ,চলতে হবেতো।
এইভাবে মানুষের জীবন চলতে পারে না। ঢাকার খিলগাঁও থেকে আগত জনৈক অটোযাত্রী আশিকুর রহমান জানান,আমরা প্রায় সময়ই এলাকার আনন্দ রিভারভিউ পার্কে ঘুরতে আসি কিন্তু রাস্তা-ঘাটের যেই অবস্থা তাতে মনে হয় আর আসা যাবে না।
আগে এখানে অনেক লোকজনকে দেখতাম ঘুরতে আসতো কিন্তু ইদানীং একেবারেই লোকজন নেই বললেই চলে। সুন্দর একটা এসেট এখানে গড়ে উঠেছে অথচ যোগাযোগ ব্যবস্থার দরুন মানুষ এই পার্কে আসতে কুন্ঠাবোধ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপরাপর ডকইয়ার্ড ব্যবসায়ী জানান,রাস্তা ভাল না থাকায় আমাদের ডকইয়ার্ডের বিভিন্ন মালামাল আনতে প্রতিনিয়তই সমস্যা হচ্ছে। এই রাস্তায় গাড়ি ঢুকতে পারে না। অনেক দিন ধরেই দেখছি রাস্তাটি নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই।
আর পিচ ঢালাই না দেয়াতে কংক্রিট উঠে গিয়ে ভয়ানক ধূলোবালিতে একাকার হয়ে আছে রাস্তাটি। এতে করে এতদ অঞ্চলের মানুষের কষ্টের সীমা নেই। খেটে খাওয়া অনেককেই দেখি প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের কর্মস্থলে যেতে। কি আর করা তাদেরকে বাঁচতে হবেতো।
অনতিবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কার করা উচিত। বর্তমানের সরকারের স্থানীয় পর্যায়ে যারাই আছেন তাদের কাছে বিনীত অনুরোধ দয়া করে লাখো লাখো মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম হাই সাহেবের মোড় হতে সাবদী পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারের এই রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করে দিন।
অন্যথায় এ অঞ্চলের মানুষের কষ্টের আর সীমা থাকবে না। যে কোন মুহুর্তে থেমে যাবে এদের জীবন-জীবিকা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এই র স ত
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’